Posts

Showing posts from May, 2019

প্রাক্তনকে

কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। ভালো থেকো, বলে পালিয়ে আসার পর, চারটে বসন্ত কেটে গ্যাছে। নাহঃ।। সরি।। গ্রীষ্ম বলতে পারি।। এই তো আজ বাদে কাল তোমার জন্মদিন।। মনে আছে জানো?? অনিমেষের জীবনে সবটা আমার পছন্দে হয়, চকোলেট কেকে ম্যাজিক মোমবাতি।। ছেলেমানুষের মতো ফু দি আমি, কিছুতেই নেভেনা।। ভুলেই যাই, দিনটা ওর।। তুমি এসব পছন্দ করতেনা, বড়োজোর জোড়যবস্তি কোথাও একটা তোমার পছন্দ মতো রেস্তোরায় নিয়ে যেতে।। কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। হোয়াটসয়াপ এর ডিপিতে কী সুন্দর লাগছে তোমাদের, শার্টটা ও আজকাল রিয়ার পছন্দেই পরো?? এই রং টা তো তুমি পছন্দ করতেনা!! অনিমেষ কবিতা শুনতে চাইলে, আজ ও ওটাই শোনাই, ওই যার শেষ লাইন এ বলে- "ওদের ভালো হোক" তোমার দাড়ির ঘনত্ব বেড়েছে, এই ক বছরে। চোখের ও গভীরতা বেড়েছে মনে হলো।। রিয়া বেশ গুছিয়ে নিয়েছে তোমায়, আমি পারতামনা; এই যেমন অনিমেষ কে গোছাতে পারলামনা, আজ ও।। কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। ফোন নাম্বার টা ও পাল্টাওনি, আমায় ব্লক করোনি কোনোদিন, এভাবে

একাকীত্ব

আমি রাস্তায় অনেকের সাথে মাঝে মাঝেই আলাপ জমিয়ে ফেলি, এই অচেনা কারোর সাথে, আমার বেশ ভাল লাগে, তাদের অচেনা গল্প শুনতে। এই যেমন আজ হলো। মহিলার বয়েস ৪২, ডিভোর্সি, এক ছেলে এক মেয়ে, বিবাহিত একজনের সাথে পাঁচ বছরের সম্পর্কে জড়িয়ে আছে, অফিস করে, শনিবার লেট নাইট পার্টি করে। ইসকনের মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে অন্যের সংসার ভাঙার কারণ হিসেবে একটা চাপা বুক ব্যথা হয় আর একলা ঘরে খুব কান্না পায়, একাকিত্ব জাকিয়ে বসে কোথাও একটা।। এক বৃদ্ধ, বয়স ৭৫ হবে, গিন্নি মারা গেছে প্রায় পাঁচ বছর, স্টেশনের চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যে যাপন। বাইরে থেকে নিতান্ত উৎফুল্ল এক মানুষ। আর একটু কান পাতলে সত্যি টা শোনা যায়, "আর বছর পাঁচেক বেঁচে কাজ নেই বুঝলে? একাকিত্ব বড় কঠিন অসুখ।" আমার বড্ড আফসোস হয় এসব শুনে, কোথাও যদি একটু মলম পেতুম অসুখ সারানোর!!

দাঁড়ি কমার মাঝখানে

এই পুরো জীবনে তোমার থেকে একটা জিনিষই চেয়েছি আমি। ডায়াল ঘোরানো একটা ফোন, যে নাম্বার থেকে কাউকে ফোন করা যায়না, মাসে একবার , কিংবা বছরে দুবার ফোন আসে, একটাই খুব চেনা নাম্বার থেকে।। শহরের বুক চিরে দাঁড়িয়ে পড়ছে, সারি সারি বহুতল, যাদের কোনো আকার নেই, কারণ নেই। ওদের দিকে তাকিয়েছ কোনোদিন?? রংবেরঙের জানলায়, নানা রকমের ব্যথা টাঙানো, খালি চোখে দেখতে পাবেনা ওদের, অথচ কি ভীষণ স্পষ্ট।। অনেকদিন পর ব্যান্ডেজ খুলে, আহত জায়গাটার দিকে তাকিয়েছ কোনোদিন? তুমি চলে যাওয়ার পর অনেকটা ওরমভাবে গুটিয়ে গেছি আমি। চিরতার রসের ওপর গোলাপ পাপড়ি ছড়িয়ে পড়ার মত আরাম; সন্ধ্যের হাওয়ায়।। এলোমেলো লাইনেও, ট্রেন ঠিক নিজেকে গুছিয়ে নেয় সময়মতো। টিকিট কেটে ট্রেন এর কাছে ঝাঁপ দিতে এগিয়ে যাওয়া লোকটা গোছাতে পারেনা কিছুতেই।। মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া কোনো  লোকের সাথে আলাপ করেছ কোনোদিন?? আমার হয়েছিল কদিন আগে, ওনার চলে যাওয়ার আর তিন দিন বাকি তখন। আমি পাউরুটি দুধে গুলে খাইয়ে দিয়েছিলাম আলকোচে; আমি জানতাম তুমি আমায় খুব করে জড়িয়ে ধরলে আমার বুকের কাছটা ভীষণ ওঠানামা করে। কিভাবে থেমে যায়, তা জানতাম না তো, সেদিন দেখলাম।।

আপ্লিতা

ঘড়িতে ঠিক সোয়া পাঁচটা। এত সকালে ওঠার অভ্যেস টা এখন আর নেই পল্লবির, একসময় ছিল।আজ আবার সেই গন্ধ ওর ঘরে, জুই ফুল, আর ধূপের ধোয়া মেশা। আজ পঁচিশে বৈশাখ, প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিন। বারান্দায় এসে দাঁড়ায় পল্লবি, বৈশাখী সূর্য কদিন হলো ৪০ ছুঁয়েছে, জোরালো আলো এসে পড়লো ওর মুখে, চোখ বুজে এলো ওর। বাড়ির গলি দিয়ে একটা প্রভাতফেরি এগিয়ে যাচ্ছে আগুনের পরশমণি গাইতে গাইতে,  ধীর পায়ে ঘরে এলো পল্লবি, বালিশের নিচের  গীতবিতান টা বের করল আলতো করে, ৭৪ নম্বর পাতায় লুকোনো চিঠিটায় হাত রাখতেই, এলার্ম বেজে উঠল ফোনে। চোয়াল শক্ত করলো পল্লবি। জুঁইয়ের গন্ধ ছাপিয়ে নাকে এলো কোর্ট চত্বরের চায়ের গন্ধ, তেতো একটা গন্ধ। যার  থেকে আজ রেহাই পাবে পল্লবি। মন শক্ত করলো পল্লবি, আজ পঁচিশে বৈশাখ না, আজ ৯ই মে, আজ কোর্টের ফাইনাল হিয়ারিং হয়ে যাবে,পাঁচ বছরের দাম্পত্য থেকে আইনত মুক্তি পাবে সে। উপরি পাওনা মেয়ে আপ্লিতার ওপর সম্পূর্ণ অধিকার, সবকিছু প্রায় ফাইনাল। কিন্তু জুঁইয়ের গন্ধটা যেন পিছুই ছাড়ছেনা আজ।মা এসে দাঁড়ায় পাশে, বলে- " আজ তো একটা গান গাইতেই পারিস, পলি, আজ থেকে আপ্লিতা তো তোর। তোর ছোটবেলার সেই প্রিয় ভোর, আজ প্রায় দু বছর কোনো