মন ভালোদের গল্প


মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বর্ণ বিদ্বেষ, জাতিভেদ সব মিলিয়ে জেরবার ভারত তথা গোটা বিশ্ব, দোষারোপ, অসহযোগিতা, গুজব, বাড়ছে পাল্লা দিয়ে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে বাড়ছে মনের দূরত্ব ভেঙে পড়ছে সভ্যতা সম্পর্ক আমাদের ভেতরের সবটুকু ভালো, গ্রাস করছে মন খারাপ। অনেক অক্সিজেন ঘুরছে চারপাশে, আমরা জানতেও পারছিনা, তাই সবার জন্য আজ কিছু মন ভালো খুঁজতে বেরিয়েছিলাম আমরা।।


সঙ্গীতা আইয়ার। বড় হয়ে ওঠা কেরালার পালাক্কাড়ে। পেশায় একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং সাংবাদিক। কিন্তু এর পিছনে তিনি পৃষ্ঠপোষকতা করেন একটি সংস্থার। ‘ভয়েস ফর এশিয়ান এলিফ্যান্ট সোসাইটি’। ক্যালিফোর্নিয়া কেন্দ্রিক এই সংস্থা লড়াই করে ভারতে হাতির অধিকার নিয়েই।
ছোট থেকেই কেরালার বিভিন্ন মন্দিরে ভগবানরুপী হাতিদের প্রতি ভক্তদের শারীরিক অত্যাচার তাকে নাড়া দিত, জীববিদ্যায় স্নাতক ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর এর পরও  এই বিশালাকার প্রাণীটির কষ্ট তাকে সমানভাবেই নাড়া দিতে থাকে, তথ্যচিত্র বানিয়ে ফেলেন  'Gods in Shackles' ।এই তথ্যচিত্র প্রকাশের মধ্যে দিয়েই শুরু হল লড়াইটা। তাঁর কাজে সাড়া দিলেন বহু মানুষ। সরব হলেন এই পাশবিকতার বিরুদ্ধে। ২০১৪ সালে এই কাজ পৌঁছে গেল বেঙ্গালুরুর বন্যপ্রাণী উদ্ধার এবং পুনর্বাসন কেন্দ্রের এক আধিকারিকের কাছে। এই তথ্যচিত্রের ভিত্তিতেই হাতিদের অধিকার রক্ষার দাবিতে তিনি মামলা দায়ের করেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। 
বছর তিনেক বাদে সঙ্গীতা আইয়ার আবারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের। পোষ্য হাতিদের নিরাপত্তার কথায় জোর দেন তিনি। দেখান, ২০১০ সালে দেশের ঐতিহ্যবাহী পশুর মর্যাদা দেওয়ার পরেও হাতিকে দাসত্বের শিকার হতে হচ্ছে। এবং পৃথিবীর মোট ৩৫০০০ এশিয় হাতির মধ্যে ৬০ শতাংশের বসবাসই ভারতে। এবং চিহ্নিত বিপন্নপ্রায় প্রাণী হিসাবে। কিন্তু এসবের পরেও চলছে অত্যাচার, সঙ্গীতা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করান সে-ব্যাপারে। ২০১৮ সালে জয় আসে। বদল আনা হয় ‘কেরালা এলিফ্যান্ট ম্যানেজমেন্ট এন্ড মেনটেন্যান্স রুল ২০১২-র। পোষ্য হাতিদের প্রতি অত্যাচার ও কোনোরকম দুর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানায় আদালত।
হ্যাঁ   সঙ্গীতা আইয়ার  একজন কেরালার বাসিন্দা।


আফ্রিকার একটি ছোট্ট দেশ কেনিয়া। অর্থনৈতিক দিক থেকে তার স্থান অনেক দেশের পিছনে। কিন্তু সেখানেই ছড়িয়ে আছে অসংখ্য প্রতিভা। ৯ বছরের ছোট্ট স্টিফেনের আবিষ্কারই মুগ্ধ সারা বিশ্বের নেটিজেনরা। তার একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে সবাই জানতে পারে তার আবিষ্কারের কথা। এমন এক যন্ত্র, যাকে স্পর্শ না করেই হাত ধোয়া যায়। অথচ তার খরচও বেশি নয়। প্রায় সমস্ত মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে এমন যন্ত্র আবিষ্কারের পুরস্কারও পেতে চলেছে স্টিফেন ওয়ামুকোটা। সম্প্রতি কেনিয়া দেশের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছে তার নাম। খুব শিগগিরই উহুরু কেনিয়াত্তার হাত থেকে উজালেন্ডো অর্থাৎ দেশপ্রেমিক উপাধি পেতে চলেছে ৯ বছরের ছোট্ট ছেলেটি।


আমফান, শতাব্দীর প্রথম সুপার সাইক্লোন। মূলত দক্ষিণবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূল অঞ্চল তছনছ করে দিয়ে চলে গেছে এই দৈত্য। আর তার থাবায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আমাদের চারপাশ। উপড়ে গেছে বড়ো বড়ো গাছ, তারের জঙ্গল নিয়ে পড়ে আছে বিদ্যুতের খুঁটি। আর এর মধ্যে বাস্তুহারা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাখিরা। তাদের জন্য তো কোনো ত্রাণ নেই! এবার এই পাখিদের জন্যই বিশেষ উদ্যোগ নিলেন জয়িতা কুণ্ডু। উদ্যোগ নিয়ে গাছের ওপর রেখে দিচ্ছেন ছোটো ছোটো কলসি। যাতে সাময়িকভাবে পাখিরা নিজেদের আশ্রয় খুঁজে নিতে পারে সেখানে। সরকারের কাছেও পৌঁছে গেছে এই উদ্যোগ। এবার আমফানে বিধ্বস্ত পাখিদের জন্যও এগিয়ে এলেন তাঁরা। উলুবেড়িয়া, চণ্ডীপুর, বাগনানের কালিকাপুর ও গোপালপুরের বিভিন্ন গাছে ছোটো ছোটো কলসি বেঁধে রেখে এসেছে জয়িতাদেবীর টিম। যাতে অন্তত কিছুটা হলেও পাখিদের বাসার সমস্যা দূর হয়। তবে সবার ভরসা, পাখিরা ঘুরে দাঁড়াবেই। তারা নিজেদের বাসা নিজেরাই তৈরি করে নেবে একদিন। আপাতত সামান্য একটু ক্ষতিপূরণের জন্যই এই বন্দোবস্ত। 


করোনা ভাইরাসের আক্রমণে গোটা বিশ্ব শ্মশান হয়ে যাচ্ছে। একের পর এক মানুষের মৃত্যু, আক্রান্ত হওয়ার খবর ভয় আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রথম বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলি মুখ থুবড়ে পড়েছে।  এরই মধ্যে আশার আলো দেখিয়ে এসেছিলেন কয়েকজন ডাক্তার। সুদূর কিউবা থেকে তাঁরা ইতালি-সহ অন্যান্য দেশে গিয়েছিলেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। করোনাকে হারাতে সেখানকার ডাক্তারদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করেছিলেন। কিউবার সেই মেডিক্যাল টিমকেই যাতে এবছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়, সেই দাবিই এবার উঠল ইতালি থেকে।
কিউবা’র এই বিশেষ ‘হেনরি রিভ মেডিক্যাল ব্রিগেড’ শুধু ইতালিতে নয়, আরও ২০টি দেশে পৌঁছে গিয়েছিল। এমনকি ২০১৪-১৫ সালে ইবোলা সংক্রমণের সময়ও সবার আগে এগিয়ে এসেছিল কিউবার এই দলটি। বিশ্ব মানবিকতার যে অভূতপূর্ব নিদর্শন তৈরি করল এই দেশটি, তা অসাধারণ। সেইজন্যই এই বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য উঠে এল এদের নাম। ইতালি তো এই দাবি তুলেছেই; তাতে সম্মতি জানিয়েছে আরও অনেকে। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কী হয়। তবে ওই ডাক্তারদের এসব ভাবার সময় নেই। তাঁরা এখনও মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। লক্ষ্য একটাই, মানুষকে বাঁচাতে হবে করোনার হাত থেকে… 


সভ্যতার একদম শুরুর দিক থেকেই মানুষের পোষ্য হয়ে উঠেছিল সারমেয়। চরম দুর্দিনেও মানুষকে কখনও ছেড়ে যায়নি এই বিশ্বস্ত বন্ধু। আরো একবার তার প্রমাণ দিল চিনের একটি ঘটনা। করোনা ভাইরাসের ছোবলে প্রাণ গেছে মনিবের। তবু দীর্ঘদিন হাসপাতালেই ঠায় অপেক্ষা করে গেল পোষ্য সারমেয়টি।চিনের উহান প্রদেশের তাইকং হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হুবেই অঞ্চলের ওই হাসপাতালে গত ফ্রেবরুয়ারি মাসে ভর্তি হয়েছিলেন বছর একাত্তরের মংগ্রেল। কিন্তু তাঁর লড়াই থেমে গিয়েছিল খুব তাড়াতাড়িই। মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যেই চিরঘুমে তলিয়ে গিয়েছিলেন মংগ্রেল। করোনা ভাইরাসকে হারিয়ে তাঁর ফিরে আসা হয়নি আর। তবে হাসপাতাল থেকে ফিরে আসেনি তাঁর পোষ্য সারমেয় জিয়াও বাও-ও। মনিবের সুস্থতার খবর পাওয়ার জন্যই হাসপাতালের লবিতে ক্রমাগত অপেক্ষা করে গেছে সে। দীর্ঘ তিন মাস। মে মাস থেকে জিয়াওকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেছে উহান স্মল অ্যানিমাল প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন।


মারিয়া ব্র্যানিয়াসের বয়স ১১৩। তাঁর তিন সন্তান, ১১ জন নাতি-নাতনি এবং তাদেরও ১৩ জন সন্তান। আর এই বিরাট পরিবারের অভিভাবক ব্র্যানিয়াস বর্তমানে স্পেনের সবচেয়ে বরিষ্ঠ নাগরিক। তবে এই বয়সেও তিনি করোনা ভাইরাসকে হারিয়ে ফিরে এসেছেন। আর স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে।
ব্র্যানিয়াসের জীবনে এমন মহামারী নতুন কিছু নয়। এর ঠিক এক শতাব্দী আগে স্পেনের ফ্লু মহামারী দেখেছেন তিনি। আর তারপর গৃহযুদ্ধ। কিন্তু প্রতিবারই কঠিন পরিস্থিতি পেরিয়ে আবার সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছেন তিনি। সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটল আবারও। গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি তাঁর শরীরে কিছু মৃদু উপসর্গ দেখা দেয়। তারপর হাসপাতালে যেতেই পরীক্ষায় ধরা পড়ে তাঁর শরীরে করোনা ভাইরাস বাসা বেঁধেছে। এরপর দীর্ঘ দুমাস আইসোলেশনে থেকে অবশেষে সুস্থ হয়ে উঠলেন তিনি। গত মঙ্গলবার চিকিৎসকরা তাঁকে সম্পূর্ণ সুস্থ ঘোষণা করেছেন।


৮৫ বছরের বৃদ্ধা কে কমলাথল। ৩০ বছর ধরে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর শহরে ইডলি বিক্রি করছেন তিনি। দাম মাত্র এক টাকা। এই ৩০ বছরে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হলেও তিনি ইডলির দাম বাড়াননি। দেশের অনেক মানুষ হয়তো এখনও বেশি দাম দিয়ে খাবার কেনার মতো সামর্থ্য রাখেন না। এই ৩০ বছরে তাঁর এমন উদ্যোগ খুব বেশি সম্মান পায়নি। কিন্তু দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই হঠাৎ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তাঁর প্রশংসায় সরব নেটিজেনরা। এই লকডাউনের মধ্যেও কাজ বন্ধ রাখেননি। এই সামান্য দামেই প্রতিদিন খাবার তুলে দিচ্ছেন অসংখ্য মানুষের হাতে।


সরকারি ঋণের টাকায় ধান কিনে গরম বালিতে ভেজে খই ফুটিয়ে বাজারে বিক্রি করেছেন। কেউ আবার ওই টাকায় পাট বুনে তৈরি করেছেন ঘর সাজানোর জিনিস। বেশ কয়েক বছরের চেষ্টায় তাঁরা স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন প্রত্যন্ত গ্রামের ওই মেয়েরা। এত দিন পরে লকডাউনে সেই ‘ঋণ’ই যেন শোধ করলেন তাঁরা, সরকারের ডাকে সাড়া দিয়ে। 
জলপাইগুড়ি জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাছে প্রশাসনের অনুরোধ ছিল, লকডাউনের সময়ে রোজগারহীন মানুষের পাশে যদি কোনওভাবে দাঁড়ানো যায়। এই ডাকে এমন সাড়া মিলবে, ভাবতে পারেননি অনেকে। লকডাউনের সময়ে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন গ্রামের মেয়েরা জেলা জুড়ে ২৭ হাজার পরিবারকে কিছু না কিছু সাহায্য পৌঁছে দিয়েছেন। এবং এর জন্য এক টাকাও প্রশাসনের কাছ থেকে দাবি করেননি তাঁরা। স্বনির্ভর হওয়ার সময় যে টাকা তাঁরা জমিয়েছিলেন, সেই লাভের কড়িই দিয়েছেন সাহায্যে। যাকে জেলার লোকজন ‘অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার’ বলেই উল্লেখ করছেন।


অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার কাঁকপুল এলাকার বাসিন্দা বঙ্কিমকে এলাকার মানুষ একডাকে চেনেন ‘বৃক্ষপ্রেমী’ হিসেবে। অনেকেই ডাকেন ‘গাছদাদু’ বলে। বাড়ির বাইরের এলাকায়, প্রতিবেশীর বাড়িতে,  সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ করেছেন বঙ্কিম। এখনও পর্যন্ত লক্ষাধিক বৃক্ষরোপণ করেছেন বলে জানালেন। অশোকনগর থানা, হাসপাতাল, বিদ্যালয়, সরকারি অফিস চত্বর, হাবড়া-নৈহাটি সড়কের পাশে বহু গাছ তাঁর হাতে পোঁতা। এলাকার এমন জায়গা খুঁজে বের করা কঠিন, যেখানে তিনি গাছ লাগাননি।যখন চাকরি করতেন, তখন বেতনের টাকায় গাছের চারা কিনে রোপন করতেন, বিলি করতেন। এখন পেনশনের টাকায় একই কাজ করে চলেছেন।
সাম্প্রতিক আমপানের দাপটে প্রচুর গাছগাছালির মৃত্যু দেখে মানসিক কষ্টের মধ্যে আছেন বৃদ্ধ। সকলকে অনুরোধ করে বলছেন, ‘‘গাছ আমাদের পরম বন্ধু। গাছ না বাঁচলে আমরাও বাঁচব না। আমাদের বেঁচে থাকার একটাই পথ, আরও বেশি করে গাছ লাগানো।’’


মাদুরাই এর বাস কন্ডাক্টর ভি. কারুপ্যাসামি, বাসের এক বৃদ্ধা  যাত্রীর করোনা পরিস্থিতি এবং বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানের বিষয়টির ব্যাপারে উদাসীনতা দেখে, বাড়ির লোকের সাথে আলোচনার পর তার মে মাসের সম্পূর্ন বেতন যাত্রীদের জন্য 2000 মাস্ক কেনার কাজে ব্যয় করেছেন।


বিস্বাস করুন, এসব খবর ও ভাসছে চারপাশে, আদ্যোপান্ত সত্যি, হয়তো আপনার পাশেও ঘটছে কিছু। একদম ই দূষিত নয় বলে হয়তো আপনার মাস্কের ভেতর পৌঁছতে পারছেনা। পারলে একটু এই খবর গুলো ছড়ান না, আক্রান্ত বাড়বে, মন খারাপ বাড়বে অন্তত আপানি একটু পাশের লোকটাকেই সাহায্য করুন না, আমি বাড়ি পৌছলেই হবে, এরম মনোভাব টা পারলে একটু দূরে রাখুন না, দেখবেন আমরা সবাই একসাথে সেরে উঠবো। সারা পৃথিবীতে আপনি একা বেঁচে আছেন, আর কেউউ নেই, ভেবে দেখেছেন কোনোদিন বিষয়টা? পারবেন তো? একটু ভাবা প্র্যাক্টিস করুন, একসাথে বাঁচতে চান এখনো সময় আছে।।

Comments

Popular posts from this blog

Sunday_Motivation... 🌻

নববর্ষ 🌸

প্রেমিকের গন্ধ