১১ই অক্টোবর 🌼
মাঝে মাঝে শেষ বিকেলে, মাস্কের নিচে লুকিয়ে পড়া শহরটার ব্যস্ত ফুটপাথের রেলিং ঘেঁষে এসে দাঁড়াই, খুব প্রিয় একটা নাম পেছনের কাচে সাটা একটা কালচে গাড়ি আমায় আগের সিগনালে ফেলে রেখে অনেকটা দূর এগিয়ে যায়, আমি থমকে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে থাকি, উল্টোদিক থেকে, "আমি নারী, আমি পারি।।" স্লোগান দিয়ে এগিয়ে আসা মিছিলটার দিকে, মিছিলের প্রথম সারিতে আমার মায়ের অবয়ব খুঁজে পাই, কিন্তু আমায় দেখতে পাইনা কোনোদিন। কারণ আমি ঠিক মিছিলে হাঁটতে পারলামনা কোনোদিনই। পারি বলতে, একটু আধটু কলম ধরতে, ভালোবাসাহীন কিছু ধূষর মহাকাব্য লিখতে পারতাম আমি....একসময় ভাবতাম ডালহৌসির কোনো এক নির্জন পাহাড়ে, কিংবা চন্দ্রতালের পাশের বিস্তীর্ণ একাকী বরফ ঢাকা প্রান্তরে বসে অনন্তকাল ধরে ভালোবাসাহীনতার মহাকাব্য লিখব আমি। এহেন আমার গল্পে ভালোবাসা টিকে যাওয়াটা একেবারেই সিলেবাসের বাইরে। কিন্তু সে থেকে গেল, থেকেই গেল, যতবার ভেবেছি, খাটের লুকোনো পেরেকে আঁচল আটকে গেছে, ফিরে দেখেছি সে ধরে রেখেছে আঁচলের খুট, মহাকাব্য ছেড়ে হরোস্কোপের গোলকধাঁধায় রোজ রোজ নতুন ছোট গল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে, আমার খাতার পাতায়। তবু জীবনের প্রত্যেক অলিগলিতেই সে আমার হাতে খাতা কলম তুলে দিয়েছে বারবার, স্বপ্নে এসে বলেছে তোর বাকি জীবনের খাতা কলমের দায়িত্ব নিলাম, বলেছে ভালোবাসা থাকলে ব্যস্ত হাওড়া ব্রিজের পাশে বসেই ডালহৌসির তুষার আকীর্ণ মহাকাব্যের প্রেক্ষাপট তৈরী করা যায়। তবু আমি চুলের জট, উঠোনে শিউলি না ফোঁটা, আতরের গন্ধ না পাওয়া ফুলশয্যা, ওড়নার ভাজে ছোট হয়ে যাওয়া ন্যাপথলিন...... ইত্যাদি অজুহাতে প্রেমহীন শহরের অলিগলিতে ছুটে বেড়িয়েছি। আর আজ হঠাৎই এক পড়ন্ত বিকেলে আমার ভালোবাসায় ফিরতে ইচ্ছে হলো, সমস্ত অজুহাত সরিয়ে এই দেবীপক্ষে আরো একবার কলম তুলে নিতে ইচ্ছে হলো, ভালোবাসার মহাকাব্য লিখব বলে।
Comments
Post a Comment