Posts

Showing posts from 2021

ডিসেম্বরের চোদ্দ সেদিন

Image
এরমই এক ডিসেম্বরের চোদ্দ সেদিন, এক পৃথিবী লিখব বলে তখন আমি ঘর ছেড়েছি; নীলচে সবুজ পৃথিবীটার কোনো কোণায় থাকবো পড়ে, একাই বাঁচবো, একাই পাহাড় ডিঙিয়ে যাব। গ্লেনারীস বা ফুটের দোকান, যখন যেমন ইচ্ছে হবে, লিখব সবই লিখেই যাব। আমি তখন মেঘবালিকা, এই শহরে আমার জন্য তখন কারোর অপেক্ষা নেই। পিছুটানহীন শীতের রোদে, আদিগন্ত আকাশ আমার, শুধুই আমার। বাঁধ সাধল একটা ছেলে, হাজার বছর যে ছেলেটা এক পৃথিবী লিখেই গেছে, ছড়িয়ে গেছে সেসব চিঠি আদিগন্ত আকাশ জুড়ে; মেঘবালিকার সাধ্যি কোথায় সেসব চিঠি ফিরিয়ে দেওয়ার? মেঘবালিকা তখন ও যে একটা খাতাও শেষ করেনি। অগত্যা সেই ঘর বাঁধল মেঘবালিকা। উঠোন জুড়ে খসে পড়ল ডিসেম্বরের সব তারারা। বহু যুগের চুপ থাকা সব কবির খাতায়, হঠাৎ করেই বৃষ্টি এল ডিসেম্বরে। ওদের তখন ঘরের ভেতর হাজার হাজার নীল জোনাকি। যেই আলোতে হারিয়ে যাচ্ছে মেঘ বালিকার একলা বাঁচা.. ভরে উঠছে একলা থাকা কবির খাতা। বলছে ওরা  কালকে থেকেই শহর জুড়ে শীত আসবে জাকিয়ে এবার। ভাববে দুজন, এক পৃথিবী লিখব এবার দুজন মিলে, এক পৃথিবী লিখতে বসে একটা খাতাও শেষ হবেনা। কারণ, ডিসেম্বরের চোদ্দ তারিখ, এরমভাবেই;  খাতার ওপর অঝোর ধারায় বৃষ্টি  হবে।।

'ভ' এ ভয়, ভ্যাকসিন আর ভালোবাসা।। ❤️

Image
 এই অতিমারীর সময়ে চারপাশে প্রেম মরে যেতে দেখছি আকছার, দূরত্ব প্রেম, দেখা না হওয়া কিংবা একসাথে প্রয়োজনের বেশি সময় কাটাতে হচ্ছে বলে ভেঙে পড়ছে একের পর এক সম্পর্ক। আবার কেউ কেউ হয়তো গড়েও তুলছে কিংবা জড়িয়েও যাচ্ছে বেশি করে। তো আজ এরমই একটা জড়িয়ে পড়ার গল্প শোনাই, কিংবা সত্যি শোনাই। দূরত্ব প্রেম দিয়ে শুরু হয়েছিল বলে করোনা, লকডাউন আমার প্রেম কাহিনীকে খুব একটা কাত করতে পারেনি। খুনসুটি, একে অপরকে সতর্ক বার্তা দেওয়া আর ঐ সব ঠিক হয়ে যাবে গোছের পজিটিভ বার্তা অনলাইনে ছড়িয়েই দিন কাটছিল। কিন্তু সব সতর্ক বার্তা কে মিথ্যে করে  অনেকের মতো আমিও করোনার প্রকোপে পড়েছিলাম, বেশ ছোট্ট করে.... মানে হসপিটাল অক্সিজেন কোনোটারই প্রয়োজন পড়েনি সে অর্থে, অনলাইন ডক্টরদের সুপরামর্শে আর মায়ের আদরে সপ্তাহ দুয়েকে ওষুধ খেয়ে সেরে উঠেছিলাম। কিন্তু ওই দু সপ্তাহে শারীরিক ক্ষতি কতটা হয়েছিল জানিনা, মানসিক লাভ হয়েছিল অনেকটা। ওই আরোই জড়িয়ে পড়েছিলাম আর কি! অফিসে থাকতেই একদিন খুব গলা আর গা হাত পা ব্যথা শুরু হয়, ও অনেকবার ফিরে আসতে বলছিল আমি পাত্তা না দিয়ে থেকে যাই আর রাতে বাড়ি ফিরে ধুম জ্বর আসে, ও ফোন করেছিল, জ্বরের ঘোর এ ও বুঝতে পারছ

মৃত্যু শহর

Image
 এ শহর এখন মৃত্যুশহর, এই হাহাকারের মাঝে দাঁড়িয়ে আস্তে আস্তে নিভে আসে, বেঁচে থাকার আশা, ইচ্ছে, তাগিদ। প্রেমিকের চোখের দিকে তাকিয়েও আশা জাগেনা এক ইঞ্চি। বরং মিথ্যে করে দিতে ইচ্ছে হয়, সমস্ত পুরোনো গল্প, যে সমস্ত গল্পে নায়করা এগিয়ে যায় না ফেরার দেশে, আর নায়িকারা বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখতে থাকে নিভে আসা আলো। সমাজ বলে এটাই ছন্দ, নায়িকাদের ভালো রাখার তাগিদেই সমস্ত গল্পে নায়কদের চলে যাওয়াটাই গল্পের শ্রেষ্ঠ প্লট।। সেরা গল্পের তকমা পাওয়ার পথ। আমার সবটা উল্টে দেখতে ইচ্ছে হয়, চোখে চোখ রেখে জানতে ইচ্ছে হয়, নিভে যাওয়ায় আরাম? নাকি নিভে যাওয়া আলো দেখতে আরাম?? কেমন লাগে নায়কের চোখে সেই নিভে আসা আলো, অন্ধকার, অনিশ্চিত সেই একলা দিনরাত; মনের গভীরের কোনো অতল খাদ থেকে উত্তর আসে, আরাম এই শহরের সেরে ওঠায়, আরাম মহামারীর শেষে।। আরাম নায়ক নায়িকার একসাথে নতুন সূর্য দেখায়।।

গুলমোহর 💮

Image
 তোমার আমার সম্পর্কটা দিন দিন ওই রোদেলা মাঠে একা দাঁড়িয়ে থাকা গুলমোহর গাছটার মতো হয়ে যাচ্ছে জানো?? আমি আজ ও বুঝলামনা সবকিছু সামাল দিয়ে ও কার জন্য এভাবে রোজ অপেক্ষা করে, ঠিক যেমন তুমি, কিসের জন্য যেনো, আমার সমস্ত তিরস্কার অভিমান রাগ ঝগড়া সামলে শক্ত করে ধরে থাকো হাতটা।। আর সবশেষে বলো "আমরা তো দুজন দুজনকে ছাড়া বাঁচবোনা বল, কেন এরম করিস তুই??" আমিও জানিনা কেন করি, হয়তো তুমি আরো একটু আগলে রাখবে বলেই... আমার বেশ মনে আছে সম্পর্কের প্রথম দিন গুলোয় আমরা কোনোদিনই ভাবিনি একে অপরকে ছাড়া বাঁচবোনা, কিন্তু তুমি বলতে, দেখিস আমরা দুজন একদিন গাছ হয়ে যাব; আচ্ছা গুলমোহর গাছের মতো?? আজ এতগুলো দিন পেরিয়ে এসে যখন আমায় আরো বেশি করে থেকে যেতে বলো, আর সমস্ত মান অভিমানের শেষে বলো আমরা একসাথেই বাঁচবো, আমার মনে হয় শুধু এইটুকু শোনার জন্যই আমি হাজার বার ছেড়ে যাওয়ার ভনিতা করতে পারি।। সেই প্রথম আলাপের দিনের গান টার কথাগুলো চুয়ে চুয়ে পড়ে, সে সমস্ত রাতের গা বেয়ে, যে সমস্ত রাতে আমি তোমার অপেক্ষা করি, অপেক্ষা করি সকাল হলেই মাফ চেয়ে নেওয়ার। তুমি নেই, ভাবতে গেলেই যে হিমযুগ আমার ভেতর নেমে আসে, পরদিন সকালে তুমি ফিরল

হেমন্তে হারিয়ে যাওয়া একটা চিঠি 🍁

Image
 প্রিয় রোদ্দুর পাশে এসে দাঁড়ালে, তোমার শরীরে হেমন্ত জমে থাকতে দেখি আজকাল, সেই গ্রীষ্মের আলাপ থেকে, শ দুয়েক বসন্ত কেটে গেছে আমাদের...  তবু তোমার হেমন্তে আটকে থাকার কারণ জানা নেই আমার। আমার শাড়ির খুটে যত্ন করে বেঁধে রাখি তোমার গায়ের হেমন্ত কে। বিকেল বেলায় হারিয়ে যায় আমার ডায়রীর সমস্ত কবিতারা, ওদের প্রায়শচিত্ত শেষ.... তবু যারা টিকে থাকে ওদের আমি মাঝরাতের জন্য বাঁচিয়ে রাখি। তুমি আসার সহস্র দিন আগে থেকেই আমার গায়ে তোমার গন্ধ, টের পেয়েছিল সমস্ত চারাগাছ। আমি কতবার আয়নাকে বলেছি, "না না ওরম কিছু না.." বারান্দায় হেমন্ত এসে দাঁড়িয়েছে ততবার,  আমি শুধুই ঘাড় গোজার মতো আস্তানা চেয়েছিলাম, ভোর আর বিকেলের মাঝে। আমার সমস্ত প্রাক্তন প্রেমিকের অসাধ্য ছিল সেটুকুই, আর তুমি, নিজেই ঘর হয়ে গেলে আমার। ভোরবেলা আদর জানলা দিয়ে বেরিয়ে গেলে, আমি আদরদাগ মুছতে লন্ড্রিতে পাঠাইনা চাদর।  অগোছালো বিছানাতেই সন্ধে বাতি রাখি আমি, আর জানলায় একটা গোলাপ গন্ধী ধুপ। আর তোমার আমার গল্পের বয়েসী তোমার জন্য আমার অপেক্ষা, সে তো আছেই। তুমি ফেরার পর, সেই চা, দোলনা, রংচটা দেওয়ালের ভেতরকার রঙিন সব গল্প, চলতে থাকে রোজ। এই শ দুয়েক