ঠাকুরের জন্মদিনে 💐

নমস্কার। আমার নাম... আজ বরং ছদ্মনাম টাই ব্যবহার করি, আমি মোহনা চ্যাটার্জি, আজ পঁচিশে বৈশাখ, আমার প্রাণের ভীষণ কাছের এক ঠাকুরের জন্মদিন, মা অনেকসময় আমাকে বলে, পাড়ার অন্য মেয়েদের মতো আমি ফল কেটে , নকুলদানা সাজিয়ে ঠাকুরকে পুজো দিনা, কিংবা প্রদীপ জ্বেলে, নিয়ম মেনে সন্ধেটাও না, একেবারে দিনা তা নয়, তবে বেশিরভাগ টাই কালেভদ্রে, আমার বাড়ির মূর্তিগুলোর ও মনে নেই শেষ ঠিক কবে আমি ওনাদের পাত পেরে খেতে দিয়েছিলাম।
সে যাই হোক, আজকের দিনটা আমার সত্যি পুজো মনে হয়, ভোর থেকেই নাকে একটা ধুপ জুঁই ফুল মেশা গন্ধ, আমার সঞ্চয়িতার ভেতর ও পাই এই গন্ধটা। এই ঠাকুরের কাছে আমি মাঝে মধ্যে গল্প করতে বসি, একা। এই যেমন আজ বসেছি। আর খুব সুক্ষভাবে ভেবে দেখেছি, আমার মনের একদম অন্ধকার কোনগুলোর হদিস শাহরুখ খান নয়, এই ঠাকুরের কাছেই থাকে।।
ওনার সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই, ওনাকে না হারমোনিয়ামে বাধা যায়, না গিটারে, না সময়ে না মনে।
বাঁধন আমার ও খুব একটা ভালো লাগেনা। চাকুরিজীবি, আধুনিকা, রুচিশীল, সংস্কৃতি মনস্কা এক নারী, আমি। যে প্রেম কে চিৎকার করে স্বীকার করতে জানে, গোলাপের চেয়ে রডোডেনড্রোন বেশী পছন্দ যার,যে পিছনে ফেরা পছন্দ করেনা, চলে যেতে চাইলে দু হাত খুলে চলে যেতে দেওয়ার সময় কুঁচকে থাকা চাদরের কথাও মনে পড়েনা আমার। তবে কেউ চলে যাওয়ার পর সারারাত রবি ঠাকুরের সাথে গল্প করে, পর দিন সকালে সেই তেজী, দীপ্ত, নিজেকে আবার খুঁজে পাই আমি।। বাবা চলে যাওয়ার দিন রাতেও আমি চিৎকার করে 'মৃত্যুঞ্জয়' আবৃত্তি করেছিলাম বেশ মনে আছে, রবিঠাকুর আমার কাছে শরতের ভোরে শিউলি বিছানো মাঠের মতো শান্তির।।
আবার এরকমই কোনো এক  রাতে,  প্রতিবাদ করতে না পারা, পরিবারের চাপে পরাধীন, প্রবল অনিচ্ছায় নিজের সবটুকু অপ্রিয় কারোর কাছে লুটিয়ে দেওয়ার পর ও যখন অসংলগ্ন ভাবে নিজের ভালোবাসার জন্য গেয়ে ওঠে, "আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয় মাঝে, আর কিছু নাহি চাইগো..."। রবিঠাকুর তার ও।।
এসব গল্প আমায় রবিঠাকুরই বলেন, আমার খুব শান্ত লাগে, ধীরে ধীরে শিকড়ের মতো গভীর ভালোবাসতে শিখি আমি, হয়তো বা অন্যদের শেখানোর চেষ্টাও করি।।
শুভ জন্মদিন ঠাকুর।।
প্রার্থনা করি, নতুন সকাল আসুক, খুব তাড়াতাড়ি।।

Comments

Popular posts from this blog

Sunday_Motivation... 🌻

নববর্ষ 🌸

অলস দুপুর