Posts

Showing posts from March, 2019

বসন্তঝড়

এই যে তুমি আসবে বলে, অপেক্ষাদের গলায় দড়ির, ফাঁসের মাঝে আটকে গেছি; তেমন ভাবেই তুমিও আজও, ওই পাড়েতেই দাঁড়িয়ে আছো, কারণ তোমার কাছের থেকে, দূরে থাকার কারণ বেশী।। এই যে তুমি আসবে বলেই চা এর ভাঁড়ে মুখ লুকিয়ে, কাঁদছি যে খুব; তেমন ভাবেই তুমিও আমার রুমাল ভেবে খাতার পাতায় মুখ লুকোবে, আর দেবে ডুব।। এই যে তোমার মেসেজ এলেই, মায়ের কথার অবাধ্য হই, যত্ন করে জল মোছা ঘর, ডিঙিয়ে ছুটি ফোনের কাছে; তোমার বোধহয় ওরম করে রিং বাজেনা, কানের কাছে হয়তো বা সেই আলতো করে গজল বাজে।। এই যে তুমি ফিরবে ভেবেই পা বাড়িয়েই, আটকে গ্যাছ এন্টেনাতে, ওই কারণেই আজ ও আমার টিভির পর্দা সাদা কালো। কে আর জানে কোন সময়ে ছাদের পাশে, কোন মেঘটা বাসবে ভালো।। এই যে আমার শহর জুড়ে আজকে ভীষণ রোদ উঠেছে, হাওয়া আপিস গুজব রটায়, বজ্র বিদ্যুৎ বৃষ্টিপাতের; বাসের সিটে সেই মেয়েটার চুল উড়ছে, যার চুলে আজ হঠাৎ করেই, গন্ধ ভাসছে তোমার কাঁধের।। এই যে আমি বলতে গিয়েও, অনেক ব্যথা লুকিয়ে ফেলি, বুকের খাজে; আমিও জানি ওদের তুমি বের করবেই কবর খুঁড়ে, সেদিন আমি গুছিয়ে নেব বুকের আঁচল, বসন্ত ঝড় থামবে বুকের, তোমার নামের হাওয়ায় উড়ে।।

যাকে আজ রঙ দেওয়া হলনা

আজকে বরং একটা ছেলের গল্প বলি? শুনবে বলো ? চৌরাস্তায় চায়ের দোকান, রুটিন মাফিক। বছর আটের একটা ছেলে ঘুমিয়েছিল, পাশবালিশে; তারই নীচে ছোট্ট চিঠি, 'গেলাম তবে'- এ সংসারে বড্ড ট্রাফিক।। এমনই সব গল্প শোনায়, বসন্ত দিন।। আমিও তখন বছর পাঁচেক, বাবার মিলে বন্ধ তালা, হঠাৎ করেই; এসব কথা হাওয়া অফিস, জানায় না তো; সব পাতারাই উড়বে ভেবে, ঝড়ে পড়ে এমন দিনে, কিছু পাতা মায়ের মত আটকে থাকে, শেষ অবধি, ওরাই জেতে, তুমি ও জানো!! এসব কথাও শোনায় বটে, বসন্ত দিন।। এই যে তোমার আমার মাঝে, দূরত্ব দিন, দূরত্ব রাত; পালিয়ে আমি যেতেই পারি দু চোখ মেলে, কিন্তু আমি সেই ট্রেনেরই টিকিট কাটি, যে সব ট্রেনের শেষ স্টেশনে তোমার বাড়ি।। বিপদ বুঝে হাত বাড়াতে সবাই পারে, হাতও পাতে অনেক কেউই, তোমার মত বুক পাততে কজন পারে? সেই যে সেদিন চার্চএ গিয়ে, পাঁচটা আগুন জ্বালিয়েছিলাম, মন খারাপে, সেদিন বোধ হয় গুড ফ্রাইডে, পরের দিনই তোমার চিঠি, তুমিই বলো, জেসাস তবে মিথ্যে বলে?? তোমার আমার বাক্যালাপও অ-নিয়মমাফিক, তুমি বল একদিন ঠিক পালিয়ে যাবোই, এ সংসারে ভাঙ্গনগুলোই রুটিনমাফিক, আমিও জানি, একটু স্রোতের উল্টো গেলে

টেবিল টার্নার 🎨

প্রাক্তন প্রেমিকের প্রেমিকার সঙ্গে মুখোমুখি এক টেবিলে বসেছো কখনো?? প্রচ্ছন্ন আগুন তোমার চোখে, আর তার চোখ বৃষ্টি ভেজা বসন্তের মত স্নিগ্ধ। ওরা দুজন রোজ দিনের শেষে অন্তত মুঠোফোনে একে অপরকে কাছে টানে, একসাথে থাকার রিহার্সাল করে, প্রত্যহ আয়নায় দাঁড়িয়ে বলে -  "আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না!!!" আর কোনো রং চেনেইনা ওরা... টেবিল টার্ন করে, তুমি ট্রুথ সিলেক্ট করো, তোমার আয়নার রং বসন্তের মত, মুখ দেখা যায় না ওতে। তবু সকালে উঠে রোজ বল "আমি পারবো!!" বাইপাসের পাশের কোনো হোটেলের চার তলার কোনো ঘরে, তোমায় এলোমেলো করার পর যখন সে বলে, আমার অন্য কাজ আছে, তুমি অন্যের হতে পার।।  নরম চোখে আয়না দেখ তুমি।। আয়না বলে ওঠে, তুমি পারবেই!!! 🎨

প্রলাপ-১

হাওড়া ব্রীজ ধরে হেঁটে চলেছি আমি, সানাই এর আওয়াজ টা মুছছে না কান থেকে। আমি কখনো ওভাবে কাউকে হারাইনি জানো? আমায় কেউ শান্তনা ও দেয়নি, তাই, তবু, বেনারসীর রঙ দেখে, একলা লাগছে আজ। কী একটা সে নেই, সে নেই সুর চারপাশে। কেমন দেখতে হয়, ছেড়ে যাওয়াদের?? রাত দেড়টার ট্রামের মত কী?? বলবে আমায়? তুমি ফিরতে পারবে আমার কাছে?? আমার বালিশের কাছে বোরোলিন থাকে, আমি ঠিক সামলে নেব, শুধু এই সানাই টাকে থামাও তুমি।। একবার থামাও প্লিজ!!

ভো-কাট্টা 🙃

আমার শহরে দার্জিলিং এর মতো মেঘ করেছে জানো? জমাটি কুয়াশা,  শুধু  পাহাড় দেখা যাচ্ছে না, এই যা...         হাজার পৃষ্ঠা উল্টে আসার পর, আজও আমার মনে হয়, আমি আর তোমায় ভালবাসতে পারলাম কই, তাই তো আমার সাথে মূহুর্ত কাটানোর পর ও আমাদের খুব প্রিয় গান লিখে অন্যের ছবি টানিয়ে দাও নিজের দেয়ালে। জানো, প্রায় বছর চোদ্দো আগে, মামাবাড়ির সামনের গলিতে অনেক ভীরের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রথম চলে যাওয়া দেখছিলাম। চলে যাওয়ার রং সাদা আর গন্ধ টা রজনীগন্ধার মত। তারপর থেকে চলে যাওয়ার ভয় পাইনা আমি। কান্না পায়, এই যা। সে তো ট্রেন স্টেশন ছাড়লেও কেঁদে ফেলি আমি, তুমি অত ভেবোনা তার নিয়ে।পুজোর বিকেলের কফি হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে যেমন তোমার চলে যাওয়ার ভয় পেয়েছিলাম,ওরমটা রোজ রাতে পাই আমি। ভালো রাখতে পারলাম কই?? তুমি ও চলে যেতেই পারো, কাউকে বাঁধিনা আমি, দূর থেকে বিরহ সাধনা করতেই পারি, করিও তো। প্রতিযোগিতাও পারিনা, তাই তুমি চাইলে ও তোমার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট হতে পারবনা আমি, বড়জোর দার্জিলিং এর সেই রঙিন একচালা হতে পারি, যেখানে ২৪*৭ তোমায় বেঁধে রাখার কোনো পাহাড়াদার নেই। সে যাই হোক, ঘুড়ি, লাটাইকে যতটা চায়, অ

সমান্তরাল

চাদর ঢেকে ভিজছে শহর, পাখির ঠোঁটে জলের বুক; পুড়ছি তোমার দুরত্বতে, অথৈ জলে আমার সুখ।। ঘড়ির কাঁটা থমকে গেছে, হয়তো তখন পাঁচটা দশ; বজ্র, বিদ্যুৎ, বৃষ্টিপাত ও প্রেমের কাছেই মানছে বশ।। সাতটা পাঁচের লোকাল চেপে, রোজের একই উপন্যাস; বৃষ্টি ভিজে নতুন শোনায়, তোমার আমার দীর্ঘশ্বাস।। চুল শুকিয়ে আয়না দেখি, চোখের কোনে জমাট জল; অবাধ্য এই মনটা কে রোজ, নতুন কী আর শোনাই বল?? চিলেকোঠায় মোমের নীচে, গালিব রুমি পড়ছে কেউ; অসময়ের বৃষ্টিপাতে, নতুন করে বাড়ছে ঢেউ।। অন্ধকারে ব্যালকনিতে কাগজ ফুল ও ভিজছে চুপ; ক্রীমের আঁচড় নখের ডগায়, ঠোঁট ছুঁইয়ে যায় কার চিবুক।।? অন্য শহর, অন্য ছাঁদে, নতুন কিছু লিখলে আজ ?? স্বপ্নে এসো, অপেক্ষাতে, তোমায় ঘিরেই বৃষ্টি সাজ!!