Posts

Showing posts from July, 2019

মেঘ পিয়ানো

সমান্তরাল তাকিয়ে থাকো তুমি, শেডের নিচে ভিজতে থাকে ট্রাম ও, বালিশরা রোজ কান্না লোকায় কিসে, কোন স্কেলে ঠিক মাপবে বুকের ক্ষত?? কোন পাড়াতে বৃষ্টি আসে রাতে, কোন পাড়াতে হারিয়ে ফেল ছাতাও?? মেঘ জমলে পিয়ানোদের রিডে, সব শ্রোতাদের বাঁশির সুরেই কাঁদাও?? আজ ও তুমি একলা জাগো রাতে, চুল ঘেটে দেয়, সে ও আমার মতোই?? শেষ বিকেলের রোদ পড়ছে মুখে, ওকেও কি ঠিক লাগছে আমার মতোই?? অনেকটা পথ হাঁটার ছিল তোমার, আমার পাশে, বুকমার্কের মতো। প্রথম সকাল দেখার ছিল তোমার, আমার সাথে, বাবুই পাখির মতো।। মেঘলা কোনো শহর পড়ে আছে, তোমার দেওয়া বইয়ের পাতার মাঝে, "জন্ম আমার মন খারাপের টবে, একাই জীবন কাটিয়ে দিতে হবে।।"

নীল শিফন শাড়ি আর বিবাহবার্ষিকী

নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। তোমার কথা মনে পড়লেই, আমার দর্জিলিং এর ম্যাল মনে পড়ে, ম্যালএর হাতল ভেঙে যাওয়া বেঞ্চটা, আর তার পেছনে এলিয়ে পড়া রাস্তা; রাস্তাটা ধরে এগোলে, একটা ক্যামেলিয়া ফুলে সাজানো ব্যালকনি, নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। অপেক্ষা করছে, ঠিক ততটা অপেক্ষা, পাহাড়ি নদীর মোহনা ছুতে ঠিক যতটা অপেক্ষা লাগে, আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। ইটের বাঁকাচোরা রাস্তার ওপর শীতেল রোদ মেখে দাঁড়িয়ে আছে,  কেভেন্টার্স,  গ্লেনারীস।। সকাল থেকে, তুমুল বৃষ্টিতে এই ঘিঞ্জি শহরটাকে ভালোবাসতে চেয়েছে ওরা, যেমন, আমি  তোমায় ভালোবাসতে চেয়েছি, মরীচিকা হয়ে।। আমাদের ছুঁয়ে দেখা হয়নি একে অপরকে, এলার ও হয়নি সবটা ভালোবাসা, দর্জিলিং এর জন্য পড়েছিল কিছুটা।। নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। রক গার্ডেন এর তুমুল জলস্রোতের সামনে, এলার ঠোঁট নতজানু হতে চেয়েছিল, একবার।। কিন্তু অত সময় কোথায় আর। অত অবসর কোথায় আমাদের, প্রেমিক কে লুকিয়ে তোমার গলা

পাতাবাহার

পাতাবাহার ঝড়ছে বিকেল জুড়ে, সন্ধে করে দিন ফিরছে বাড়ি; বারান্দা তে অপেক্ষাদের বাসা, ভাবছি আমি, আজ না এলে আড়ি।। বিছানাতেই বইয়ের পাতা খোলা, আলসে দুপুর, খেলছে লুকোচুরি; মেঘচে নীলের বুকটা খানিক চিরে, স্বপ্ন দেখছে, পেটকাটি এক ঘুড়ি।। আজকে আমি সাজছি আবার টিপে, কাজল টেনে তোমার মনের মতো; মেঘলা রঙের শাড়ির আঁচল ঘিরে, গুছিয়েছি আজ, শিউলি ছিল যত।। আমরা শুধু তাদের দিকেই তাকাই, ব্যস্ত স্টেশন ছাড়িয়ে যারা থাকে; রাত্রি জেগে তাদের কথাই ভাবি, আমার দিকে চোখ পড়েনা যাদের।। বুকের পাশে বৃষ্টি রঙের তিলে, যাকে ভেবে, আজ ও তুমি একা; ভোরের আজান, মিথ্যে শোনায় এখন, তিস্তা পাড়ে হয়নি আজ ও দেখা।। সকাল থেকে ঝড়ছে পাতাবাহার, আমি এখন জলপট্টি মাথায়; কেন তুমি অমন দূরে থাকো??? আমার দিকে চোখ পড়েনা তোমার??

আজ না হয়

আজ আমার শহর ভোর , বৃষ্টি খুব, ফাইল ক্লোজ, ভাবনাতেই দিচ্ছি ডুব।। একলা মন আটকে যাক জানলাতেই, হাওয়ার পাল, আটকে থাক পর্দাতেই।। আজ যেন থমকে থাক সব কলম, ব্যাথায় যেন কাজ না দেয়, আর মলম।। পুরোনো ছাদ, চিলেকোঠার জ্বর বাড়ুক, আজ না হয়, হোক শরীর, মন হারুক।। কাগজী ফুল, গ্রিলের গায়ে, খুব ভিজুক, আজ না হয়,  আলাদিন ও জিন খুঁজুক।। আজ না হয়, ফোন থাকুক, হোক চিঠি, আজ না হয়, সরব হোক সব স্মৃতি।। সিগনালেই বন্ধ থাক, ওয়াইপ মোড, ঝাপসা কাঁচ, টাচস্ক্রিনএ রিপিট মোড।। আজ না হয়, না থেমেই, ভীষণ জোর ট্রেন চলুক, আজ না হয়, উত্তরে, সব প্রেমিক, হ্যাঁ বলুক।। আজ না হয়, কম্পাস ও দিগ্বিদিক শুণ্য হোক, আজ নাহয়,আরেকবার তোমার চোখ মেঘলা হোক।। আজ না হয় ঠিকানা পাক নীল খাম ও, এক পেয়ালায়, চুমুক দিয়ে, মস্তানি হোক, ইয়ে শাম ও।। আজ হঠাৎ তোমায় ছুঁই, পুরোনো প্রেম পড়ুক মন, তোমার ও আজ খেয়াল হোক, কজন তোমায় ফ্রেন্ডজোন।। আজ না হয়, রাত্রিভোর একলা হোক,চাঁদনী চাঁদ, আজ না হয়, একলা মেয়ের রাত্রি পাক তোমার কাঁধ।। আজ না হয় বুকের খাঁজ ,নির্ভেজাল সত্যি হোক, তোমার পিঠ, আটকে যাক, আদরদাগ, নীলচে নখ।। আজ না হয়, দীর্ঘ হোক, দুরত্ব প্রেম,

ফিরতে হতোই

আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, এই কোলাহল, ডামাডোলের শহর ফেলে, ক্যাসেট রিলে জড়িয়ে যেত তোমার দেওয়া ডাকনাম,আর- ঝগড়া ঝাটির কালচে ধোয়া, বেরিয়ে যেত চিমনি বেয়ে.... অনেক কথাই দেওয়া থাকে, রুটিন কষে, রাখার বেলায়, হিসেব থাকে আর কজনের,? তোমার মত অমনি ভাবে ঝেড়ে ফেলেও, রাত দুপুরে জড়িয়ে ফেলে আর কজনে?? আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, তুমিই আমায় প্রথম গালিব পড়তে বলো, বুক সেল্ফএ রুমির বই ও তোমার দেওয়া, তারপর ও কি আমার হাতে অন্য কিছু মানায় বলো?? তুমিই আমার শেষ বিকেলে প্রথম চুমুর অবাধ্যতা, আলোর কোলাজ শহর জুড়ে, আমরা দুজন ভাসছি গভীর অন্ধকারে, তুমিই যাকে, অলিভ সার্টে, বাসস্ট্যান্ডে দেখতে গিয়ে, মিস করে যাই শেষ বাসটাও, ঘড়ির কাটায় আপিস দেরী।। আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, বৃষ্টিভেজা, হালকা তোমার পাঞ্জাবিটার বোতাম খোলা, শহর ভেজা কুয়াশারাও, খবর রাখে তোমার ঠোঁটের, আমি না থাকলে আটকাবে কে, ওসব গুজব? সন্ধেবেলা বৃস্টিফেরত বাড়ির পথে, আটকে গেছি, উইন্ড স্ক্রিন এ তে তোমার নামের শব্দ দেখে। বাইপাসে তে গাড়ির মিটার, একশো ছুঁলো, নিয়ন আলোয় ভাসছি আমি, তোমার নামের আদর মেখ

বৃষ্টি বারান্দা

পাতলা হলদে সেলফেন পেপার এর মত হলদে একটা বিকেল, আজ শহরের গায়ে লেপ্টে আছে, আকাশের  ঈশান কোনে কালচে মেঘ জমে, বেশ কালো হলুদের কম্বিনেশন এর ঢাকাই জামদানিটার মতো জমাটি দেখতে লাগছে। উত্তরমুখ পাঁচতলার ব্যালকনি থেকে, গঙ্গার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে বিদীপ্তা... সেই কৈশোরের প্রথম দিক থেকেই, এইরম বিকেল খুব পছন্দ বিদিপ্তার। অনেক কিছু মনে পড়ে যায় এইরম বিকেলে, সুজয় স্যারের কোচিন, পড়ার ফাঁকে, শুভমের চোখে চোখ রাখা মেঘলা বিকেল, সহজ সরল জিওমেট্রিও মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যেত। তারপর শুভমের সাইকেল এর পাশে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই লাজুক হয়ে ওঠা, আর এরম মেঘলা এক বিকেলেই প্রথম "ভালবাসি" শুনে ফেলা। জলছবির মতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে সবটা, আজ প্রায় সাতাশ বছর পর। শুভম, এলোমেলোভাবে কপালে এসে পড়া কয়েক গোছা চুল, আর দুটো গভীর চোখ, বিদীপ্তার জীবনের প্রথম পুরুষ বলা চলে, ঝগড়া, কথা কাটাকাটি, খুনসুটি, মেলায় নাগরদোলা চাপা, বাড়ির লোককে লুকিয়ে সিনেমা, বিজয়দার দোকানের ফুচকা, রাতের তারার নীচে, নৌকোর ওপর জন্মদিনের কেক কাটা, বন্ধ ঘরে দুজনের দুজনকে গভীরভাবে আবিষ্কার, ভবিষ্যতের লালচে নীলচে স্বপ্ন.... এইভাবে বছর তিনেক কেটে গে