Posts

Showing posts from 2018

উত্তুরে হাওয়া

এইসব ভিজে যাওয়া শীত সন্ধ্যেরা নিষিদ্ধ ভাবনাদের ফেরত নিয়ে আসে,  আমার তোমার কথা মনে পড়ে, হাজার বারণ পেরিয়ে....  কথা দিইনি আমরা কোনোদিন, কারণ আমরা জানতাম কথা দেওয়া হয়,না রাখার জন্যই... তবু তুমি বলেছিলে- একদিন এমন আসবে, চাকরি টা পেয়ে গেলেই হোয়াটসঅ্যাপ এ আমাদের ছবি লাগাবে তুমি, তোমার গল্প লেখার, কলম থাকবে আমার হাতে। তোমার মুছে যাওয়া আড়াই বছরের থেকে আলাদা হবে, আমাদের রূপকথা।। প্রিন্সেপে ফুচকা কম্পিটিশন, ওটাও মনে আছে তো,?? তোমার গীটার বেজে উঠত আমার কবিতায়, পুজোর খুনসুটি, আরসালান, আমার বাড়ি ফেরত মেসেজ এ লেগে থাকত তোমার অপেক্ষা।। এখন আর কিছুই নেই, ছুঁয়ে থাকা বলতে একে অপরকে জন্মদিনের ছোট্ট মেসেজ।। একটার পর একটা, চাকরি না পাওয়ার খবর দিতে দিতে, তুমি একদিন যোগাযোগ বন্ধ করলে..  বলেছিলে, আমার বরের সাথে একদিন চা কিংবা আমার রান্না করা খিচুড়ির আড্ডায় বসবে, তুমি জানতে, আমার অভিমান।। আমি ও সেদিনই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম অভিমান এ!! আজ শুধু এই উত্তুরে হাওয়া, নিষেধ মানলনা, তোমার ভাবনারা আবার এলোমেলো করল একান্তে...❤️

অপ্রেমিকা

আমি একা থাকতে পারিনা একদম, একলা উবার রাইড তো কোনোভাবেই নয়, তবুও সেদিন একটা অগত্যা জুড়ে দিল জীবন, আর আমি একলা ঐ ছোট্ট গাড়িটায়, তাও আবার নেমন্তন্ন এ যাচ্ছি বলে বেশ সেজেগুজে, একটাও আমায় মানায়না, বেশ জানি!!! আমি আদ্যোপান্ত একটা এলোমেলো মেয়ে, বাস ট্রামের খোলামেলা ভীরে যে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে পারে সহজেই, এহেন আমার, আজকের এই একলা রাইডে নিজেকে হঠাৎ খুব অচেনা লাগছিল, হেডলাইট আর ট্রাফিক লাইটের মায়াবী আলোর মাঝখানে দাঁড়িয়ে, খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার, নিজের জন্য, এক হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকার মত, যে কথা দিয়েও রাখতে পারেনি, এলোমেলো চুলের ছেলেটাকে ভালোবেসেছে কিন্তু ভালো রাখতে পারেনি এক ছাদের নিচে। বহুদিন পর ঝকঝকে বিদেশি জীবন থেকে ফিরে তাকে বড্ড মনে পড়ছিল, সে কি এখন ও, অতটাই ভালোবাসা গুছিয়ে রেখেছে...? আমি পৌঁছে গেছি, ড্রাইভার দাদাটা ডাকল। ধূলো উড়ছে আমার প্রিয় শহরের হাওয়ায়। আমায় যে ছাদ বাঁধতেই হবে, আমাদের ছাদ!!!! তোর গলা শোনার ইচ্ছে হল হঠাৎ....

প্রেমিকের গন্ধ

আমার শহরের সারা গায়ে একটা রংচটা ক্রীমের গন্ধ আজ, আর বিকেলটা ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকের মত তামাটে রঙের... তোমার কথা ভাবছিলাম আজ বিকেলে।। হ্যাঁ, তুমিও থামতে বলেছিলে সেইদিন, বলেছিলে শুধু নামটুকু মনে রাখতে, আমি ই পারিনি থামতে। তোমার উষ্ণতা সেদিন এক বেশ্যার আত্মাকে জাগিয়ে তুলেছিল, প্রতি রাতের শেষে যে শুধুমাত্র এক নিজস্ব পুরুষের কামনা করত, যার গায়ে লেগে থাকবে শুধু তার গন্ধ। আমি থেকে যেতে বলেছিলাম তোমায়..... তারপর থেকে রোজ তোমার গন্ধে ডুবতে ডুবতে  শিউলি ফুলের মত পবিত্র হয়ে উঠছি আমি। মেরুণ রঙের লিপস্টিক লাগিয়ে আয়নার কাছে এসে দাঁড়ালে আজকাল রজনীগন্ধার গন্ধ পাই আমি। ওইদিন তুমি ও শরীর চেয়েছিলে, স্নান ঘরের দরজার ওপাড়ে আমার সব হিসেব আবার গুলিয়ে গেছিল, শাওয়ারের জলের সাথে আমার গা বেয়ে নামছিল, অনেক চিৎকার- "I am in love with someone else" , "তোমার সাথে থাকা আর সম্ভব না" , "আমি অফিসে কাজ করতে আসি, প্লীজ নাটক বন্ধ করো।" , "ভুলটা আমার, লাই দিয়ে আমি মাথায় তুলেছি, তোমার যোগ্যতাই ছিল না" । কানে হাত দিয়ে সমস্ত চিৎকার থামিয়ে বাইরে এসে দেখি, তুমি তোয়াল

আগলে রাখা

তোমার বুকে আগলে থাকা, আমার প্রতি রাতের, গন্ধ চেনে গোলাপ ফুল আর মৃত্যু পথের আতর।। প্রথম থেকেই তোমায় আমি পাহাড় বলে ডাকি, বেহায়া ঝড়না বুকের তিলে,আগলে রাখে যাকে।। রবীন্দ্রনাথ,প্রিয় শহর,চা এর ভাঁড় ছোঁয়ানো ঠোঁটে , ধূষর বিকেল, ট্রাম জানলায় রঙীন হয়ে ওঠে।। গভীর রাতে বৃষ্টি এসে, ঝিলের বুকে তৈরি করে ক্ষত, শব্দটা ঠিক, তোমার আমার অন্তমিলের মত।। শীতের সকাল, ফিসফিসিয়ে, কফি কাপের কানে, কী সব বলে, তোমার আমার আদর গুলো জানে।। ভোর হয়েছে, সকাল হবে, অনেক টা পথ বাকি, আগলে রেখো, যেমন করে ঝড় আগলায় পাখি।।

বাঁশিআলা

কাঁচের গুড়ো গলায় ছড়িয়ে পড়ার মত কষ্ট হয়, যেদিন থেকে  তোর পাশে ঘুম ভাঙ্গেনা। বোগেনভিলিয়ার আলগা পাপড়ি, দুরন্ত কোনো ঝড়ে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার মতো ব্যথা জন্মায়, তুই ফিরে না তাকালে। বছর পঁচিশ প্রতীক্ষায় থাকা জোনাকির আলোর মত নিস্তেজ করে দেয়, তোর শরীরে লেপ্টে থাকা অন্যকোনো গন্ধ। শীতের বিকেলের মত নিমেষে নিমেষে এসেছিল, সমস্ত রঙীন আলো, যেদিন তোর পিঠে লেগে থাকতে দেখেছিলাম অন্য নেইলপলিশের সুখ।। সুইসাইড পয়েন্ট এ দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার শেষ ভাবনার মত, আজ ও আরেক বার তোকে 'ভালোবাসি' বলতে ইচ্ছে হয় তবু। ফানুসের মত নিষ্পাপ ভাবে আরো এক শেষবার তোকে লেপ্টে থাকতে ইচ্ছে হয়, কয়েক মূহুর্ত।। এইসব ভাবনা লিখতে লিখতে, মাঝখানের কোনো এক অজানা দ্বীপে আমি ঘুমিয়ে পড়ি, শেষ রাতে চোখে ভেসে ওঠে, আমার ডায়েরির পাতায় একটা বোগেনভিলিয়া গাছ, আর তার নীচে বসে বাঁশি বাজিয়ে চলেছে ফ্লুরিজের সামনের বাঁশি দাদাটা... বাজিয়েই চলেছে.. করুন একটা সুর... আমি দুবার ফুঁপিয়ে উঠি ভালোবাসি বলে, শীত আসে কাছে কোথাও......।।

আদরবাসা

তোর সঙ্গে প্রথম কথা মেসেঞ্জারের নীলচে আলোয়, য়্যালকোহল আর শাহরুখ খানের গল্প ঘেঁষে, তোর লেখাতে মন পিছলোল ... চুপই ছিলাম, তুইও হাজার দুয়েক মাইল দূরে তবুও মনের শান্ত ঝড়ে, কাছেই কোথাও তোর ই নামের মেঘ ডাকল।। শহর তখন শীত আদুরে, সন্ধ্যে রঙের মেঘের নীচে, ঘোর কুয়াশায়, আমি তখন অফিস ফেরত, একলা ট্রেনে.. জরুরী ডাক, তোর সাথে ঢের কথা আছে, তুইও জানতি , বিকেল শেষের রূপকথারাও তোর জন্যই অপেক্ষাতে.।। তবুও এই হাজার দুয়েক মাইল, পেরোতে যে সময় লাগে মনের, তা টের পেলাম এই বছরের শীতে, তোর ভেতরের রুমিও জানে কিছু... আমার দু'চোখ মেঘলা হঠাৎ, বৃষ্টি নামার আগের মতন, আবার কবে ফিরবি শহর, আর কতবার একলা হব, এসব ভেবেই তোর ই পিছু।। তারপর সব আগুন রঙের, মন খারাপের সাদা পাতায়, ক্রেয়ন আঁকা নতুন ছবি.. আদর ভেজা শরীর জুড়ে, বেহাগ বাজে, কাছে..দূরে..., প্রশ্নবোধক, দারির মাঝে, কতটা সুখ লুকিয়ে থাকে, খবর রাখে মনের শরীর.... ক্যাসেট  রিলে চৌরাসিয়ার বাঁশির মতো স্নিগ্ধ সুরে....|| এখন ও আদর ছড়িয়ে আছে, বুকের মাঝের নীলচে খাঁজে... তাইতো হাজার মন খারাপেও কোথাও একটা আদর বাজে, আলতো করে গালিব বাজে,।।

সহনীয়

এক লাখি দু লাখি রূপকথার মত জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে অন্য হাতে হাত আর অন্য চোখে চোখ রেখে, অনির্বান চলে যাওয়ার পর একেবারে বিপদজনক বাড়ি হঠাতি ভেঙে পড়ার মত অবস্থা হয়েছিল মিতুলের জীবনটার…ঠিক যেন টয়ট্রেনের লাইনে বনগা লোকাল চালানোর মত…এলোমেলো… তারপর অনেক দিন পর সেই লাইনে টয়ট্রেন ফিরে এলেও…বাজার মন্দা…ঠিক যেন ঝন্ঝাট সরিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো পশ্চিমবঙ্গীয় পাহাড়…যাই হোক…এ মন্দার সময়ে নানা প্রেম অপ্রেমের গল্প কিংবা কবিতা কিংবা ফিলোসফিকাল বই পড়ে নিজেকে সামলেছে মিতুল…আর সেই শাহরুখ খান রূপী (Dear zindegi- Jahangir Khan) মনের ডাক্তারও খানিকটা সামাল দিয়েছিল মিতুলকে…  তবু এরই মধ্যে প্রেম যে এক্কেবারে পায়নি বা হয়নি তা নয়… (কপিবুক মানসী ছিল্লার না হলেও… ফরমালিটির খাতিরে সুন্দরী বলাই যায় মিতুলকে…) কিন্তু তাদের সবাইকেই  কেমন যেন অসহনীয় লাগত মিতুলের… মন তো দূরের কথা চোখ মুখ না দেখেই তারা শুধু কী পড়ে আছ…?কোথায় কোথায় তিল আছে ? জানতে অধিক আগ্রহী হয়ে পড়ত…ফলে শরীর মনের বর্ডারে দাঁড়িয়ে সব হিসেব গুলিয়ে যেত মিতুলের…দিনের শেষে প্রিয় প্রাক্তনের সোশাল মিডিয়ার দরজায় মুখ থুবড়ে পড়ত মিতুল… তার জন্য পৃথিবীর কোনো কোণায় কারো অপেক

চিলেকোঠা

অর্নব কে নিজের কল্পনার সাথে কিছুতেই মেলাতে পারেনা ঝিলমিল…মদ গাজা লেট নাইট আড্ডা এসবের যতটা সীমার দাগ ঝিলমিল মনে মনে কাটতে পারে তার অনেক ওপর দিয়ে যায় ছেলেটা…আবার ঝিলমিলকে সব জানিয়ে… ঝিলমিল ও বাড়াবাড়ি করেনা বেশী… কারণ ওর মনের মতো সো কলড পছন্দের ক্রাশ বা প্রাক্তনকে এত্ত পাগলামো করতে দেখেনি ঝিলমিল… ঘুম ভেঙে এর আগে কেউ ওকে সারপ্রাইজ দেয়নি… আপিস ছেড়ে আসেনি সযত্নে… ঝগড়ার পর সেধে কথা বলতে আসেনি… দশ মিনিট দেখবে বলে রাত জেগে এসে আধঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকেনি… ডেট করতে রাইড চড়ায়নি… কমপ্লিমেন্টের বদলে মোটুরাম বলেনি… ফেসবুক প্রোফাইল মুখস্ত করেনি… কবিতার মানে না বুঝেও ঝিলমিলের জন্য এলোমেলো শব্দ সাজায়নি… স্বপ্ন না বুনে সত্যি দেখায়নি… ঝিলমিলের মার সামনে এসে মাথা তুলে দাঁড়ায়নি… আর এই এত্ত অন্তমিলের মাঝে…ঝিলমিল দাড়ি কমা গুলিয়ে ফেলে… চিলেকোঠায় ভিজে যাওয়ার পরও নিজেকে চার্চের মোমবাতির মত পবিত্র লাগে… তপোবনের মত নিশ্চিন্ত লাগে… ঝিলমিলিয়ে ওঠে পাহাড়ী নদীর মত… <3

ভালো টালো বাসা টাসা

জীবনে চলতে চলতে কিছু আঘাতের দাগ থেকে যায় আমাদের সক্কলের গায়ে…তিতাসের ও আছে… এই ফেব্রুয়ারীর চোদ্দোটা এলে…আঘাতের দাগগুলো আরো স্পষ্ট হয় তিতাসের… এই তারিখটা কে ঠিকঠাক চিনিয়েছিল… বলিউড বাদশা… তারপর থেকে ছোটবেলার কোচিং.. কবিতার খাতা…আরচেস গ্যালারি… সব মিলিয়ে এই দিনটা ছিল মনের কোণে বসন্ত আসার দিন… ইচ্ছে অনেক ছিল তিতাসের এই দিনটাকে নিয়ে…বসন্তের হাওয়ায় মাখা প্রিন্সেপ…উড়ে যাওয়া চুল…অপ্রত্যাশিত ছুঁয়ে যাওয়া…আর নীলচে খামের ভেতর একটা হলদে চিঠি… ব্যস্!! এইটুকু দেখেই স্বপ্ন ভেঙে যেত তিতাসের… স্বপ্ন ভাঙার কোনো আওয়াজ হয়না…সেদিনও হয়নি… যেদিন…এরমই কোনো এক মেঘলা চোদ্দয় তিতাসের প্রিয় উপন্যাসের নায়িকা বদল হয়েছিল… আওয়াজ না হলেও ঘা বেড়েছে…ব্যথা বেড়েছে…স্বপ্ন থেকে দূরের হয়েছে তিতাস……    কিন্তু হঠাতি এক রোদেলা চোদ্দ এসে পড়ে… নীলচে খাম আসে তিতাসের ঠিকানায়…মন খারাপ ভালো করে একটা আদর মাখা রূপোলী বিকেল আসে… হাতে হাত রেখে আবার স্বপ্ন দেখায়…উপন্যাসের শেষের মত তিতাস ও এক দোয়েল সাঁকোর খোঁজ পায়…যেখানে স্বপ্ন আর সত্যি দুইয়ে মিলে যায়…  প্রেমে পড়া বা ওঠার কোনো দিন হয়না…আওয়াজ ও হয়না… বুঝতে হয়…বিশ্বাস করতে হয়… হা

cheers_বসন্ত

বসন্তটাও ঠিক সমুদ্রের মত, জানিস? কিচ্ছু নিয়ে যায়না… সুদসমেত ফেরত দেয়… বেশ কয়েক বসন্ত পর গোলাপ কাটা গুলো নরম পাপড়ি হয়ে যায়… খুব রোদ্দুরে… সেই দার্জিলিং ম্যালে পছন্দ হওয়া ছাতাটা কাছে চলে আসে… হাওয়ায় আবিরের গন্ধ… আসে তোর প্রিয় গুলমোহর গাছটার পাশ দিয়ে যে ছবির মত রাস্তাটা চলে গেছে, আমার খুব পছন্দের রাস্তাটা… ওই পথে মিনিট তিনেক হাঁটলে আমার নতুন বাসা… বেশ ভালো বাসা বলতে পারিস… কিন্তু ঐ এক দোষ আমার… গোছাতে পারিনা…  ভালো বাসায় এক দোসর আছে… সেই গোছায়… যখন সময় পায়…আমি বারান্দায় এক কোণে দাঁড়িয়ে ওকে দেখি… ধৈর্য বটে…আমার সবটা বেয়াদপি সহ্য করে… সব ধুলো জমা গল্পগুলো নতুন করে শোনায়…   শুধু আমার ছেঁড়া ডায়েরীটার শব্দগুলো ছাড়া… ওটা বুঝতে পারেনা… আমিও ওসব বোঝাতে চাইনা…কয়েক বসন্তের ক্লান্তি যে… মন জুড়ে… বাসার পাশের বোগেনভিলিয়া গাছটার নীচে জোনাকি পোকার আলোয় আমরা গল্প করি… শেষ রাতে আবার মনে পড়ে…… বসন্ত ফেরত নেয়না…কয়েক বসন্ত পর ফিরিয়ে দেয়…

কথাবার্তা

- কী রে গোমড়া মুখ করে একা বারান্দায় যে… - খুঁজছি… -কী??? -নিজেকে… -বটে… :/ -তুই আর কী বুঝবি…ফি হপ্তায় বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে ঘুরে বেড়ালে এসব কি আর বুঝবে??? -(চুপ) -কী রে উত্তর দিলি না যে… -আমিও খুঁজি জানিস… -কী?? -আইপডের ভীরে পুরনো একটা টেপরেকর্ডার… ই-রিক্সাদের মাঝে হাতে টানা একটা রিক্সা… পিডিএফ এর পাশে একটা হলুদ মলাটের মলিন বই… সিসিডির সামনের ফুটপাথের লেবু চা… আর… -আর … ফ্লুরিজের সামনের ফুটপাথের মিষ্টি বাঁশির সুর…একটা ছেড়ে যাওয়া ট্রেন থেকে বাড়ানো হাত…হলুদ সর্ষে খেত… -তুই কী করে জানলি…?? :O (ফোনে রিংটোন বেজে ওঠে- 'চ্যাহেরা কিউ মিলতা তেরা…ইউ খাবসে মেরী…ইয়ে কেয়া রাজ হ্যায়…') -তুই বস, আমি ফোনটা ধরে আসি…আবার হারিয়ে যাসনে……

মনে পড়ে

তোর মনে পড়ে পর্ণা… এক সময় কত পাতা কবিতা লিখতাম তোর জন্য…এক একটা ডায়েরী শেষ করে তোকে গিফট করতাম… ছাপা হতনা…কিন্তু ওগুলোর বদলে তোর খুশি পেতাম… আজকাল লেখাই হয়না… এক হাতে আমার সাইকেল আর এক হাতে তোকে নিয়ে যখন ঐ ব্রীজের ধারে ঘুরতে যেতাম…তুই বলতি…ব্রীজের ধারের মাটির ভাড়ে চা নিয়ে হাইওয়ের লড়ির লাইন দেখতে বেশ লাগে তোর…তোর ইচ্ছাপূরণ করতে গিয়ে মাঝেমাঝেই হেডলাইটের আলোগুলো আমাদের অবাধ চুম্বনে বাঁধ সাধতো…মনে পড়ে…? আজ অনেকদিন পর আবার সার বাঁধা লড়ি দেখলাম.ব্রীজটার ওপর… নিয়ন আলো ভালো লাগত তোর…তুই বলতি বৃষ্টির সময় নিয়ন আলোগুলো ম্যাজিক দেখায়…মনে পড়ে? ঐ আলোতেই তোকে অন্য কারোর সাথে অন্যভাবে…থাক সে কথা… আজ বিকেলেও এক প্রস্ত বৃষ্টি হল…নিয়ন আলোয় ম্যাজিক ও হল… প্রিন্সেপঘাট পছন্দ ছিল তোর…সূর্য ডুবে আসা নদীর পাড়ে গুনগুনিয়ে উঠতিস তুই… মনে পড়ে… নাহ্ পড়ে না…তুইই তো বলেছিলি সেদিন… কিচ্ছু মনে পড়েনা… আজ কেন লিখতে বসলাম জানিস…ওপাশের ঘরে খুব চিত্কার হচ্ছে…আমার ছেলেটা স্কুলের কোনো মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে ঘুরতে গেছিল…আমার স্ত্রী তা জানতে পেরে…আদরের ছেলেকে শাসন করছে… ঠিক যেমন একদিন তোর মা…………… আর আমি এ ঘরে…তোকে খুব মন

প্রিয় কবি আর প্রিয় ভালোবাসা

ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে প্রথম দেখা…অর্ণব আর দিঠির…সেদিনটা ছিল কোনো এক বৈশাখের পচিশ…এদিনটার হাওয়ায় যেন কেমন একটা ধূপ আর জুই ফুলের গন্ধ মিশে থাকে… সেদিনও ছিল… অর্ণবের বেশ তাড়া ছিল… সকাল তখন সাতটা হবে… ভোরের স্নিগ্ধ রোদ্দুর সবে গভীর হচ্ছে…সেই মোমগলা রোদ্দুরে ওদের প্রথম দেখা... শেষের কবিতার অমিত গোছের পরিপাটি অর্ণব…নামী কলেজের ইংরাজী সাহিত্যের গেস্ট লেকচারার…মনের কোণের বড় অংশ জুড়ে আছে রবিঠাকুর…এহেন প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিনে দিঠির সাথে সহসা ধাক্কায়, হাত থেকে সন্চয়িতা আর রজনীগন্ধার গোছা পড়ে যাওয়ায়…একটু বেশীই বিরক্ত হয় অর্ণব…কিছু বলতেই যাচ্ছিল…চোখ পড়ে দিঠির দিকে…চোখে মুখে দুঃখিত ভাব…ঠিক তখনি হাওয়ায় জুঁইয়ের গন্ধটা প্রকট হয়…মন ভালোর গন্ধ… অর্ণব শুনেছে…আমাদের মন যেখানে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে যায়…সেখানে হঠাতি মন ভালো এক গন্ধ পাওয়া যায়… এর আগে পায়নি অর্ণব,এই গন্ধ…কিন্তু দিঠি তো আর লাবণ্য নয়…তবে..? দিঠি অগোছালো…উসকোখুসকো…ছেঁড়া ফাটা জিনস…লুজ টি সার্ট…এলোমেলো চুল…আর ঘেটে যাওয়া কাজল…পচিশের সকালে এভাবে কোনো বাঙালী মেয়েকে মানায়না… বিরক্তি বাড়ে অর্ণবের…চোখ যায় দিঠির হাতের ট্যাটুতে… অন্যরকম… সযত্নে লেখা

অন্ত মিল

রূপকথা রঙ ক্যানভাস পেত রোজই, আঁচড়ে মাতত নীল রঙা নেলপালিশ|| নেশাতুর চোখ হাওয়া পর্দার খোঁজে, গোপন খেলার খোঁজ পেয়ে যেত বালিশ|| কার্নিশ জুড়ে বৃষ্টি রঙের আদর, ভাড়ের চায়ের ব্যথা তুমি বুঝতেনা|| ওই বিছানায় হলদে পাখির চাদর, কয়েক জন্মও ভোলাতে পারলনা|| আমার শহর অনেক গল্প লোকায়, তুমি বলতে আস্ত ছেলেমানুষ|| যে সব কাপড় বসন্ত হাওয়ায় শোকায়, তুমি আমি তাকে এক নামে ডাকি ফানুস|| সন্ধ্যেবেলার গোপন খেলার শেষে, রাত্তির জেগে ধ্রুবতারা খুঁজি আমি|| রঙীন জল আর ধোয়ায় ধোয়ায় মিশে, রাতবিরেতে অনেক ব্যস্ত তুমি|| অনেক কিছু বলার ছিল তোমায়, খবর রাখেনি তোমার পাড়ার গলি|| তোমার ঘরের আয়নাও চেনে আমায়, চুকেবুকে গেছে আজকে বরং চলি|| তোমার আমার পছন্দ মিলতনা, তোমার আকাশে দুমুখো দুই শালিখ|| হাতের রেখা রূপকথা বলতনা, শায়েরী ছাড়া খবর রাখেনি গালিব||

যোগাযোগ

তোর আমার সেই প্রথম কথার শুরু,  বিছানা কোণের অবাধ্য এক ভোরে... রাতের পাশে ঘুম না আসা রাতে, মন খারাপ ও আবির হয়ে ওড়ে... মুঠোফোনের বার্তাবাহকে হঠাৎ, টুং টাং করা কাঁচের রঙিন ছবি... ভালোবাসা বাসি কখন কোথায় মেলায়, ইতিহাস ঘেটেও খবর পায়নি কবি... মাপা কথা আর মেপে রাখা মন ভালোয়, দুজনেই ভাবি তুই যদি কাছে আসতিস... কোণের রেডিও আফসোসে গেয়ে ওঠে, যদি ভুলে যেতি, কবে কাকে ভালোবাসতিস... তোর আমাকে প্রথম ডাকার রাত্রি... গল্প কবিতা সত্যি হল .... 'আমরা ও সহযাত্রী' ।।।। তারপরে মন বশ মানেনি ঘুমে.. মাঝরাত্রের ক্ষতয় আদর মলম.. শীত কেটেছে তোর গল্পে গানে, কিংবা হঠাৎ তোর চাদরের ওম... কিন্তু আবার কথার পিঠে কথা, বাড়িয়েছিল গভীর গোপন ক্ষত... ওরকমটাই হওয়ার ছিল বোধহয়, রূপকথার সেই দুয়ো রাণীর মত... তোর আমার সেই প্রথম দেখার সকাল, প্রিয় শহর তখন বসন্ত শেষের আঁচে... কৃষ্ণচূড়ায় ছদ্ম পাখির গানে... তোর আর আমার নিঃশ্বাস ও বড় কাছে... তারপর আর ফেরত আসেনি ব‍্যথা, ভোরের আলোর গন্ধ এখন ঘ্রাণে.. এমনি ভাবেই দুপুর পেরিয়ে রাত্রি, দুরত্বটাও আজ ভালোবাসতে জানে... তোর আর আমার নাম মেলাতে বসে, নাস্তিক মনে

তিতির পাখির বাসা

অনেক দিন কথা হয়নি তোমার সাথে, আমরা অনেক দিন এক ছাদের নিচেই, তিতির আস্তে আস্তে বাড়ছে তোমার শরীরে (name, gender decided) আর আমরা দূরে সরছি, অনেক দিন কফি কাপে আড্ডা দিইনি দুজনে, কাল তুমি ঘুমিয়ে পড়ার  পর মাঝরাতে, একটা ফোন এসেছিল, তোমার কোনো কলেজের পুরনো বিশেষ বন্ধু, ডেকে দেওয়াই যেত, আমার মনে হল তোমার মধ্যে তিতির ও ঘুমোচ্ছে নিশ্চিন্তে, সকালে যে যার মতো, ঐ ফোন থেকেই মনটা খারাপ খারাপ, প্রশ্ন উত্তর করাটা ও যে আমাদের স্বভাব বিরুদ্ধ, স্টেশনের ভীরে একটা মেয়ে দাঁড়িয়েছিল রঙিন স্কার্ফ এ, পাশের ছেলেটা সযত্নে ওর দিকে তাকিয়ে, কতদিন তাকাইনি তোমার দিকে, তোমার প্রিয় বর্ষা চলছে শহরে,, কতদিন ভিজিনি আমরা, তোমার চায়ের গন্ধের মাঝে বসে লিখছি তোমায়, তিতির কে টের পাওয়ার পর চা ও কম খাও আজকাল, চিঠি ও দাওনা আমায়, কাল রাতে এই বইটা পড়তে দেখলাম, এর মধ্যেই রাখলাম চিঠিটা, প্লিজ উত্তর দিও..... তোমার সৌমক... আপিস থেকে বাড়ি ফেরে ইরা, ক্লান্তিটা আজকাল বড্ড বেশী, চা খেতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু বানাতে ইচ্ছে করছে না, নাহ !! চা না, সৌমক কে দেখতে ইচ্ছে করছে, অনেক দিন, ওকে জড়িয়ে ধরা হয়নি, কাল রাতে দুবার ঘুম থেক