Posts

Showing posts from 2019

ওপাড়ে

তোমার সাথে রডোডেনড্রন দেখার কথা ছিল আমার। ক্যামেলিয়া, অর্কিড সাজানো বারান্দায় আমার অপেক্ষা করার ছিল তোমার। অপেক্ষা করছো এখন ও?? আজ তোমায় খুব মনে পড়ছে যেন, আজ প্রায় বছর সাতেক পর তোমার সাথে দেখা হবে আবার। খুব মনে পড়ছে, তোমার সাথে প্রথম দেখা। কলেজ ফেরত, রিবন, লজেন্স, হাওয়াই মিঠে নিয়ে, আমার জন্য স্কুলের সামনে তোমার অপেক্ষা।। ছাদের ওপর হাতে হাত রেখে, তোমার গলায় প্রথম সুনীল গাঙ্গুলী শোনা, ইউনিভার্সিটি ফেরত ট্রাম, আর তোমার ফু য়ে ঠান্ডা হওয়া এক ভাঁড় চা, মনে আছে গো তোমার? সেই যে সেই ফাল্গুনে, আমার খোপায় বোগেনভিলিয়া গুঁজতে গিয়ে, বাবার হাতে ধরা পড়লে, ভেবেছিলাম সব রূপকথা শেষ। কিন্তু তুমি কথা রেখেছিলে, অগ্নিসাক্ষী রেখে, রোজ খোঁপা সাজানোর দায়িত্ব নিয়েছিলে তুমিই। খুব মনে পড়ছে, চারপাশে ধূপের গন্ধ, তোমায় স্পষ্ট দেখতে পারছি আমি, দেখতে পারছি, আমাদের বিয়াল্লিশ বছরের সংসার, আমার সিঁদুর লেগে থাকা, তোমার পাঞ্জাবি। আমার আঁচলে বেঁধে রাখা তোমার আনা কাজল কৌটো। অয়ন কে প্রথম কোলে নিয়ে, তোমার ছেলেমানুষি। দোলের শান্তিনিকেতন, তোমার রিটায়ারমেন্ট এর পর আগ্রা, আর ঐ অয়ন এর ক্লাস ফাইভ এর গরমের  ছুটিতে,

সহস্র রাত, সহস্র শীত 🍁

এমনিভাবেই সহস্র দিন পেরিয়ে এসেও, গোলাপ কাটা আটকে থাকে, খোপার ভাজেই। তেমনি ভাবেই, হাজার শরীর ডিঙিয়ে এসেও, গোপন কোনো স্বপ্ন থাকে, পুরনো এক বুকের খাজেই।। এমনিভাবেই সহস্র দিন পেরিয়ে এসেও, মফস্বলের সন্ধে নামে, মর্জিমাফিক চায়ের ঠেকে, অনেক সকাল পেরিয়ে এসেও, গভীর রাতে, একলা মেয়ে, শীতপোশাকে, ভাঙা প্রেমের গন্ধ শোকে।। এমনিভাবেই সহস্র দিন পেরিয়ে এসেও, কাঁদছো তুমি চিলেকোঠায়, ফোন আসেনি । অনেক পাহাড় ডিঙিয়ে আসা, সব হারানো, দিদার কাছে, আজ ও নাকি, ভালোবাসার কাছে ফেরার ডাক আসেনি।। এমনিভাবেই সহস্র দিন পেরিয়ে এসেও, আজও তুমি, একটা চিঠিই লুকিয়ে পড়ো, যেমন ভাবে, আজ ও তুমি অনেক শীতেও নীলচে হলুদ মাফলার টাই জড়িয়ে ধরো।। এমনিভাবেই সহস্র দিন পেরিয়ে এসেও, যেই ছেলেটা তোমার জন্য শীত আগলাবে, মুঠোয় ক্রিমের কৌটো রেখে, তার জন্যই দিন খোয়ানো, বিকেল বেলার ব্যালকনিতে, তোমার কলম থাকবে জেগে।। এমনিভাবেই পেরিয়ে যাবে সহস্র দিন, সহস্র রাত, এমনি ভাবেই শীত চাদরে, লুকিয়ে যাবে শহরতলি।। এমনি ভাবেই স্কার্ফ পেচানো একটা মেয়ে, অপেক্ষাতে থাকবে বসে, গলির মোড়ে সহস্র রাত, সহস্র শীত।।।

শেষ দেখা

এই আমাদের শেষ দেখা, হিমালয়ের পাদদেশের ঘন অরণ্যের মাঝে, কোনো এক কাঠের রিসর্টে এই আমাদের শেষ তিনদিন।। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত, রেলগাড়ির কামরায়, দুজোড়া চোখ, কামুক হতে চাইছে প্রতিটা চলে যাওয়া মুহুর্তে।। এই আমাদের শেষ দেখা।। প্রতিবারের মতোই, তোমার শেষ ডাক ও অবজ্ঞা করতে পারিনি আমি, তোমার সাথে কখনো রাত দেখা হয়নি আমার।। তাই তোমার ডাক, নিশির মতো টেনেছিল আমায়, শর্ত তিন দিন পর, স্টেশনের ওই বড় ঘড়ির নিচে, রাস্তা আলাদা হবে আমাদের, যা আর কোনদিন মিলবেনা।। এই আমাদের শেষ দেখা।। এখন ঘড়ির কাটায় ৩টে, সূর্যের আলো নিভে এসেছে প্রায়, তবু গভীর অরণ্যের ফাক ফোকর দিয়ে তীক্ষ্ণ দাঁত বসাতে চাইছে, আমাদের শেষ দিন যাপনে, খোলা বারান্দায় বসে শোনা যাচ্ছে, অচেনা কোনো পাখি, কিংবা বিষাক্ত কোনো শ্বাপদ। আমাদের মাঝে চায়ের কাপের ধোয়া মিশে যাচ্ছে, সুদূর আকাশে। এই আমাদের শেষ দেখা।। সন্ধেটাকে তোমার পছন্দের স্পাইরাল মোমে সাজিয়ে দিলাম আমি, বাইরে পূর্ণিমার পূর্ণ চন্দ্রালোক, কাঁচের জানলায় লেপ্টে যাওয়া, আমার স্তনবৃন্ত, তুমি উম্মত্ত হয়ে সোহাগে রাঙিয়ে দিচ্ছো, আমার বক্ষদেশ, উরু, নিতম্ব, যোনিপথ।। প্রথমবারের চেয়ে অনেক তীক্ষ

October 🌼

তোমাকে আজকাল বড্ড আবছা মনে পড়ে জানো?? এ শহরে পুজো এসেছে আবার, তোমার গায়ের মতো শিউলি ফুলের গন্ধ আজকের হাওয়ায়, সারা রাত  তোমায় মনে পড়ে, তোমার আবদার, নীল খাম, আমার প্রিয় ডিও তোমার গায়ে, ভোরের দিকে অগোছালো শব্দ আসে আমার, খাতা পেন, ছুঁতে গেলেই হারিয়ে যায়।। ভোরের কাশফুলের হাওয়ায়, পাশের ছাদে, একটা সবজে শাড়ি ওড়ে, একটা না হওয়া সংসারের গন্ধ,শাড়িটার আঁচলে।। ওকে তোমার কথা বলিনি আমি, যেমন সেদিন মা কেও বলতে পারিনি, এখন মাঝেমধ্যে, এক কানের ঝুমকো পড়তে ভুলে যাই।। সহজ পাঠ আঁকা শাড়ি, আর কাঠের চুরির মতো স্বাভাবিক লাগে, আয়নায় তাকালে।। তুমিও বোধ হয় বাড়ি ফেরনা পুজোয় আর।। দুগ্গা মা কে দেখলে, বুকের কাছটায় মোচড় দেয়।। ঢাকের আওয়াজে খুব তেষ্টা পায় আজকাল, ধূপের গন্ধে ঘুম, আলোর চমকে চোখ বুজে আসে, ষষ্ঠীতে চা, সপ্তমী তে কফি, এইভাবেই দশমী এসে যায় আমার।। অঞ্জলী যায়, সন্ধি পুজো যায়, কাঠামো ভেসে যায় বহুবার।। শুধু তোমার মত কেউ জড়িয়ে ধরলে, শিউলি ফুলের গন্ধ পাইনা আর।।।।

এই শহরে ❤️

এই শহরের সব পুরোনো পাতার একটা তোমার মত নিব কলম চাই জানো?? হলদেটে পাতার গায়ে, তোমার মন খারাপি গাঢ় রঙ, কোথাও বা, ভুল লেখার নাম করে, তোমার একটু ছড়িয়ে পড়া, কিংবা তোমার অন্যমনস্কতায়, হলদে পাতার নষ্ট হয়ে যাওয়া।। তাই না??? এই শহরের সব দলা পাকানো কাগজের  তোমার মত একটা ডাস্টবিন চাই জানো?? সারা রাত ধরে সেই ভুল কবিতা কিংবা চিঠি পড়বে তুমি, মনে মনে চাইবে, আর কোনো কাগজ না আসুক তোমার ওপর, এরপরের সব লেখা, ঠিকানা পাক, তুমি এই ভুল লেখার ভাজেই গল্প বুনবে, না হয়।। তাই না??? এই শহরের সব পুরোনো কার্নিশের একটা তোমার মত পায়রা চাই জানো?? তোমাদের নিঃস্বতা ঘুলঘুলিতে বাসা বাধবে, খুব বৃষ্টিতে তোমাকে আগলে রাখবে ও, প্রোমোটার; জানলা,দরজা, গ্রিল ভাঙতে এলে, দুজনে একসাথে রাত জাগবে না হয়, অন্য সঙ্গী নিয়ে এলে কপট অভিমানী হবে তোমার প্রিয় কার্নিশ।। তাই না??? এই শহরের প্রতিটা ব্যস্ত মোড়ের, তোমার মত একটা হলুদ ট্যাক্সি চাই , জানো? বোকা যানজট এ আটকে তোমাদের প্রাচীন লাগবে দেখতে, তোমার মাথায় আটকে থাকা বোগেনভিলিয়াদের সরিয়ে দেবে, ও দুজন অশিতীপর বৃদ্ধ তোমায়, কফিহাউস, এর দিকে নিয়ে গেলে যানজট কাটবে শহরের।। তাই

বাবাকে 🙏🏻

আকাশ থেকে তারা খসার পরে, মাটির বুকে গভীর হয় ক্ষত, তেমন করেই তোমার চলে যাওয়া, আমার ভেতর উলকাপাতের মত।। আমার মতো রাগ ছিলনা তোমার অভিমান ও নেহাতই খুব কম ই, তবুও এই চলে যাওয়ার মানে, গভীর ভেবেও বুঝতে পেরেছি কই ?? বুকের ভেতর কান্না চেপে রেখে, আগলে গেছি, তোমার আমার বিকাল। ওই রাস্তায় হাঁটতে পারিনা আর, যে পথ দিয়ে এগিয়েছিল বিষন্ন সেই সকাল।। বলছে সবাই, রাখতে হবে খেয়াল অনেকটা পথ হাঁটতে হবে আমায়, ঘোর বর্ষায় ও কাঁধ পাবনা আমি, হাত পাবনা, তোমার পকেট, জামায়।। এরম করেই একলা সকাল হবে, তোমায় ছাড়াই ঘুম আসবে রাতে।। ঠিক কতটা একলা হবো আমি, মাঝ রাস্তায় বলবো আমি কাকে ??

অসমবয়েসী প্রেমিককে

তুমি তখন অষ্টাদশের গালিব, আমার তখন একুশ ছোঁয়া রুমি। এমনটাই যে ঘটবে সবার শেষে দুঃস্বপ্নেও ভেবেছিলে তুমি ?? ফুরিয়ে এলো তোমার প্রেমিকারা তুমি তখন কলেজ চায়ের ঠেকে। আমিও শাখা ভাঙতে বসে ঘাটে, শাড়ির আঁচল আটকে ফেলি,তোমার মৃত প্রেমের খাটে।। তোমার বয়েস আমার বুকের খাজে, আটকে গিয়েও, তাকায়নি আর ফিরে, আমিও তোমায় আঁচল দিয়ে বেঁধে, আটকে গেছি, তোমার কাঁধের তিলে।। এমনিভাবেই রাত বেড়েছে ভোরে, শরীর সুতোয় সেলাই করে তোমায়; আজ ও তবু, ঝগড়া ঝাটির শেষে, প্রথম দিনের গন্ধ তোমার জামায় ।।।

মেঘ পিয়ানো

সমান্তরাল তাকিয়ে থাকো তুমি, শেডের নিচে ভিজতে থাকে ট্রাম ও, বালিশরা রোজ কান্না লোকায় কিসে, কোন স্কেলে ঠিক মাপবে বুকের ক্ষত?? কোন পাড়াতে বৃষ্টি আসে রাতে, কোন পাড়াতে হারিয়ে ফেল ছাতাও?? মেঘ জমলে পিয়ানোদের রিডে, সব শ্রোতাদের বাঁশির সুরেই কাঁদাও?? আজ ও তুমি একলা জাগো রাতে, চুল ঘেটে দেয়, সে ও আমার মতোই?? শেষ বিকেলের রোদ পড়ছে মুখে, ওকেও কি ঠিক লাগছে আমার মতোই?? অনেকটা পথ হাঁটার ছিল তোমার, আমার পাশে, বুকমার্কের মতো। প্রথম সকাল দেখার ছিল তোমার, আমার সাথে, বাবুই পাখির মতো।। মেঘলা কোনো শহর পড়ে আছে, তোমার দেওয়া বইয়ের পাতার মাঝে, "জন্ম আমার মন খারাপের টবে, একাই জীবন কাটিয়ে দিতে হবে।।"

নীল শিফন শাড়ি আর বিবাহবার্ষিকী

নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। তোমার কথা মনে পড়লেই, আমার দর্জিলিং এর ম্যাল মনে পড়ে, ম্যালএর হাতল ভেঙে যাওয়া বেঞ্চটা, আর তার পেছনে এলিয়ে পড়া রাস্তা; রাস্তাটা ধরে এগোলে, একটা ক্যামেলিয়া ফুলে সাজানো ব্যালকনি, নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। অপেক্ষা করছে, ঠিক ততটা অপেক্ষা, পাহাড়ি নদীর মোহনা ছুতে ঠিক যতটা অপেক্ষা লাগে, আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। ইটের বাঁকাচোরা রাস্তার ওপর শীতেল রোদ মেখে দাঁড়িয়ে আছে,  কেভেন্টার্স,  গ্লেনারীস।। সকাল থেকে, তুমুল বৃষ্টিতে এই ঘিঞ্জি শহরটাকে ভালোবাসতে চেয়েছে ওরা, যেমন, আমি  তোমায় ভালোবাসতে চেয়েছি, মরীচিকা হয়ে।। আমাদের ছুঁয়ে দেখা হয়নি একে অপরকে, এলার ও হয়নি সবটা ভালোবাসা, দর্জিলিং এর জন্য পড়েছিল কিছুটা।। নীল শিফন শাড়ির ওপর সোয়েটার চাপিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এলা।। আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী।। রক গার্ডেন এর তুমুল জলস্রোতের সামনে, এলার ঠোঁট নতজানু হতে চেয়েছিল, একবার।। কিন্তু অত সময় কোথায় আর। অত অবসর কোথায় আমাদের, প্রেমিক কে লুকিয়ে তোমার গলা

পাতাবাহার

পাতাবাহার ঝড়ছে বিকেল জুড়ে, সন্ধে করে দিন ফিরছে বাড়ি; বারান্দা তে অপেক্ষাদের বাসা, ভাবছি আমি, আজ না এলে আড়ি।। বিছানাতেই বইয়ের পাতা খোলা, আলসে দুপুর, খেলছে লুকোচুরি; মেঘচে নীলের বুকটা খানিক চিরে, স্বপ্ন দেখছে, পেটকাটি এক ঘুড়ি।। আজকে আমি সাজছি আবার টিপে, কাজল টেনে তোমার মনের মতো; মেঘলা রঙের শাড়ির আঁচল ঘিরে, গুছিয়েছি আজ, শিউলি ছিল যত।। আমরা শুধু তাদের দিকেই তাকাই, ব্যস্ত স্টেশন ছাড়িয়ে যারা থাকে; রাত্রি জেগে তাদের কথাই ভাবি, আমার দিকে চোখ পড়েনা যাদের।। বুকের পাশে বৃষ্টি রঙের তিলে, যাকে ভেবে, আজ ও তুমি একা; ভোরের আজান, মিথ্যে শোনায় এখন, তিস্তা পাড়ে হয়নি আজ ও দেখা।। সকাল থেকে ঝড়ছে পাতাবাহার, আমি এখন জলপট্টি মাথায়; কেন তুমি অমন দূরে থাকো??? আমার দিকে চোখ পড়েনা তোমার??

আজ না হয়

আজ আমার শহর ভোর , বৃষ্টি খুব, ফাইল ক্লোজ, ভাবনাতেই দিচ্ছি ডুব।। একলা মন আটকে যাক জানলাতেই, হাওয়ার পাল, আটকে থাক পর্দাতেই।। আজ যেন থমকে থাক সব কলম, ব্যাথায় যেন কাজ না দেয়, আর মলম।। পুরোনো ছাদ, চিলেকোঠার জ্বর বাড়ুক, আজ না হয়, হোক শরীর, মন হারুক।। কাগজী ফুল, গ্রিলের গায়ে, খুব ভিজুক, আজ না হয়,  আলাদিন ও জিন খুঁজুক।। আজ না হয়, ফোন থাকুক, হোক চিঠি, আজ না হয়, সরব হোক সব স্মৃতি।। সিগনালেই বন্ধ থাক, ওয়াইপ মোড, ঝাপসা কাঁচ, টাচস্ক্রিনএ রিপিট মোড।। আজ না হয়, না থেমেই, ভীষণ জোর ট্রেন চলুক, আজ না হয়, উত্তরে, সব প্রেমিক, হ্যাঁ বলুক।। আজ না হয়, কম্পাস ও দিগ্বিদিক শুণ্য হোক, আজ নাহয়,আরেকবার তোমার চোখ মেঘলা হোক।। আজ না হয় ঠিকানা পাক নীল খাম ও, এক পেয়ালায়, চুমুক দিয়ে, মস্তানি হোক, ইয়ে শাম ও।। আজ হঠাৎ তোমায় ছুঁই, পুরোনো প্রেম পড়ুক মন, তোমার ও আজ খেয়াল হোক, কজন তোমায় ফ্রেন্ডজোন।। আজ না হয়, রাত্রিভোর একলা হোক,চাঁদনী চাঁদ, আজ না হয়, একলা মেয়ের রাত্রি পাক তোমার কাঁধ।। আজ না হয় বুকের খাঁজ ,নির্ভেজাল সত্যি হোক, তোমার পিঠ, আটকে যাক, আদরদাগ, নীলচে নখ।। আজ না হয়, দীর্ঘ হোক, দুরত্ব প্রেম,

ফিরতে হতোই

আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, এই কোলাহল, ডামাডোলের শহর ফেলে, ক্যাসেট রিলে জড়িয়ে যেত তোমার দেওয়া ডাকনাম,আর- ঝগড়া ঝাটির কালচে ধোয়া, বেরিয়ে যেত চিমনি বেয়ে.... অনেক কথাই দেওয়া থাকে, রুটিন কষে, রাখার বেলায়, হিসেব থাকে আর কজনের,? তোমার মত অমনি ভাবে ঝেড়ে ফেলেও, রাত দুপুরে জড়িয়ে ফেলে আর কজনে?? আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, তুমিই আমায় প্রথম গালিব পড়তে বলো, বুক সেল্ফএ রুমির বই ও তোমার দেওয়া, তারপর ও কি আমার হাতে অন্য কিছু মানায় বলো?? তুমিই আমার শেষ বিকেলে প্রথম চুমুর অবাধ্যতা, আলোর কোলাজ শহর জুড়ে, আমরা দুজন ভাসছি গভীর অন্ধকারে, তুমিই যাকে, অলিভ সার্টে, বাসস্ট্যান্ডে দেখতে গিয়ে, মিস করে যাই শেষ বাসটাও, ঘড়ির কাটায় আপিস দেরী।। আমাকে সেই তোমার কাছে ফিরতে হতোই, বৃষ্টিভেজা, হালকা তোমার পাঞ্জাবিটার বোতাম খোলা, শহর ভেজা কুয়াশারাও, খবর রাখে তোমার ঠোঁটের, আমি না থাকলে আটকাবে কে, ওসব গুজব? সন্ধেবেলা বৃস্টিফেরত বাড়ির পথে, আটকে গেছি, উইন্ড স্ক্রিন এ তে তোমার নামের শব্দ দেখে। বাইপাসে তে গাড়ির মিটার, একশো ছুঁলো, নিয়ন আলোয় ভাসছি আমি, তোমার নামের আদর মেখ

বৃষ্টি বারান্দা

পাতলা হলদে সেলফেন পেপার এর মত হলদে একটা বিকেল, আজ শহরের গায়ে লেপ্টে আছে, আকাশের  ঈশান কোনে কালচে মেঘ জমে, বেশ কালো হলুদের কম্বিনেশন এর ঢাকাই জামদানিটার মতো জমাটি দেখতে লাগছে। উত্তরমুখ পাঁচতলার ব্যালকনি থেকে, গঙ্গার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে বিদীপ্তা... সেই কৈশোরের প্রথম দিক থেকেই, এইরম বিকেল খুব পছন্দ বিদিপ্তার। অনেক কিছু মনে পড়ে যায় এইরম বিকেলে, সুজয় স্যারের কোচিন, পড়ার ফাঁকে, শুভমের চোখে চোখ রাখা মেঘলা বিকেল, সহজ সরল জিওমেট্রিও মাথার ওপর দিয়ে বেরিয়ে যেত। তারপর শুভমের সাইকেল এর পাশে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎই লাজুক হয়ে ওঠা, আর এরম মেঘলা এক বিকেলেই প্রথম "ভালবাসি" শুনে ফেলা। জলছবির মতো স্পষ্ট হয়ে ওঠে সবটা, আজ প্রায় সাতাশ বছর পর। শুভম, এলোমেলোভাবে কপালে এসে পড়া কয়েক গোছা চুল, আর দুটো গভীর চোখ, বিদীপ্তার জীবনের প্রথম পুরুষ বলা চলে, ঝগড়া, কথা কাটাকাটি, খুনসুটি, মেলায় নাগরদোলা চাপা, বাড়ির লোককে লুকিয়ে সিনেমা, বিজয়দার দোকানের ফুচকা, রাতের তারার নীচে, নৌকোর ওপর জন্মদিনের কেক কাটা, বন্ধ ঘরে দুজনের দুজনকে গভীরভাবে আবিষ্কার, ভবিষ্যতের লালচে নীলচে স্বপ্ন.... এইভাবে বছর তিনেক কেটে গে

প্রাক্তনকে

কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। ভালো থেকো, বলে পালিয়ে আসার পর, চারটে বসন্ত কেটে গ্যাছে। নাহঃ।। সরি।। গ্রীষ্ম বলতে পারি।। এই তো আজ বাদে কাল তোমার জন্মদিন।। মনে আছে জানো?? অনিমেষের জীবনে সবটা আমার পছন্দে হয়, চকোলেট কেকে ম্যাজিক মোমবাতি।। ছেলেমানুষের মতো ফু দি আমি, কিছুতেই নেভেনা।। ভুলেই যাই, দিনটা ওর।। তুমি এসব পছন্দ করতেনা, বড়োজোর জোড়যবস্তি কোথাও একটা তোমার পছন্দ মতো রেস্তোরায় নিয়ে যেতে।। কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। হোয়াটসয়াপ এর ডিপিতে কী সুন্দর লাগছে তোমাদের, শার্টটা ও আজকাল রিয়ার পছন্দেই পরো?? এই রং টা তো তুমি পছন্দ করতেনা!! অনিমেষ কবিতা শুনতে চাইলে, আজ ও ওটাই শোনাই, ওই যার শেষ লাইন এ বলে- "ওদের ভালো হোক" তোমার দাড়ির ঘনত্ব বেড়েছে, এই ক বছরে। চোখের ও গভীরতা বেড়েছে মনে হলো।। রিয়া বেশ গুছিয়ে নিয়েছে তোমায়, আমি পারতামনা; এই যেমন অনিমেষ কে গোছাতে পারলামনা, আজ ও।। কেমন আছো তুমি সুবর্ণ? আজ বছর চারেক তোমার সাথে দেখা সাক্ষাৎ নেই। ফোন নাম্বার টা ও পাল্টাওনি, আমায় ব্লক করোনি কোনোদিন, এভাবে

একাকীত্ব

আমি রাস্তায় অনেকের সাথে মাঝে মাঝেই আলাপ জমিয়ে ফেলি, এই অচেনা কারোর সাথে, আমার বেশ ভাল লাগে, তাদের অচেনা গল্প শুনতে। এই যেমন আজ হলো। মহিলার বয়েস ৪২, ডিভোর্সি, এক ছেলে এক মেয়ে, বিবাহিত একজনের সাথে পাঁচ বছরের সম্পর্কে জড়িয়ে আছে, অফিস করে, শনিবার লেট নাইট পার্টি করে। ইসকনের মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে অন্যের সংসার ভাঙার কারণ হিসেবে একটা চাপা বুক ব্যথা হয় আর একলা ঘরে খুব কান্না পায়, একাকিত্ব জাকিয়ে বসে কোথাও একটা।। এক বৃদ্ধ, বয়স ৭৫ হবে, গিন্নি মারা গেছে প্রায় পাঁচ বছর, স্টেশনের চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যে যাপন। বাইরে থেকে নিতান্ত উৎফুল্ল এক মানুষ। আর একটু কান পাতলে সত্যি টা শোনা যায়, "আর বছর পাঁচেক বেঁচে কাজ নেই বুঝলে? একাকিত্ব বড় কঠিন অসুখ।" আমার বড্ড আফসোস হয় এসব শুনে, কোথাও যদি একটু মলম পেতুম অসুখ সারানোর!!

দাঁড়ি কমার মাঝখানে

এই পুরো জীবনে তোমার থেকে একটা জিনিষই চেয়েছি আমি। ডায়াল ঘোরানো একটা ফোন, যে নাম্বার থেকে কাউকে ফোন করা যায়না, মাসে একবার , কিংবা বছরে দুবার ফোন আসে, একটাই খুব চেনা নাম্বার থেকে।। শহরের বুক চিরে দাঁড়িয়ে পড়ছে, সারি সারি বহুতল, যাদের কোনো আকার নেই, কারণ নেই। ওদের দিকে তাকিয়েছ কোনোদিন?? রংবেরঙের জানলায়, নানা রকমের ব্যথা টাঙানো, খালি চোখে দেখতে পাবেনা ওদের, অথচ কি ভীষণ স্পষ্ট।। অনেকদিন পর ব্যান্ডেজ খুলে, আহত জায়গাটার দিকে তাকিয়েছ কোনোদিন? তুমি চলে যাওয়ার পর অনেকটা ওরমভাবে গুটিয়ে গেছি আমি। চিরতার রসের ওপর গোলাপ পাপড়ি ছড়িয়ে পড়ার মত আরাম; সন্ধ্যের হাওয়ায়।। এলোমেলো লাইনেও, ট্রেন ঠিক নিজেকে গুছিয়ে নেয় সময়মতো। টিকিট কেটে ট্রেন এর কাছে ঝাঁপ দিতে এগিয়ে যাওয়া লোকটা গোছাতে পারেনা কিছুতেই।। মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়া কোনো  লোকের সাথে আলাপ করেছ কোনোদিন?? আমার হয়েছিল কদিন আগে, ওনার চলে যাওয়ার আর তিন দিন বাকি তখন। আমি পাউরুটি দুধে গুলে খাইয়ে দিয়েছিলাম আলকোচে; আমি জানতাম তুমি আমায় খুব করে জড়িয়ে ধরলে আমার বুকের কাছটা ভীষণ ওঠানামা করে। কিভাবে থেমে যায়, তা জানতাম না তো, সেদিন দেখলাম।।

আপ্লিতা

ঘড়িতে ঠিক সোয়া পাঁচটা। এত সকালে ওঠার অভ্যেস টা এখন আর নেই পল্লবির, একসময় ছিল।আজ আবার সেই গন্ধ ওর ঘরে, জুই ফুল, আর ধূপের ধোয়া মেশা। আজ পঁচিশে বৈশাখ, প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিন। বারান্দায় এসে দাঁড়ায় পল্লবি, বৈশাখী সূর্য কদিন হলো ৪০ ছুঁয়েছে, জোরালো আলো এসে পড়লো ওর মুখে, চোখ বুজে এলো ওর। বাড়ির গলি দিয়ে একটা প্রভাতফেরি এগিয়ে যাচ্ছে আগুনের পরশমণি গাইতে গাইতে,  ধীর পায়ে ঘরে এলো পল্লবি, বালিশের নিচের  গীতবিতান টা বের করল আলতো করে, ৭৪ নম্বর পাতায় লুকোনো চিঠিটায় হাত রাখতেই, এলার্ম বেজে উঠল ফোনে। চোয়াল শক্ত করলো পল্লবি। জুঁইয়ের গন্ধ ছাপিয়ে নাকে এলো কোর্ট চত্বরের চায়ের গন্ধ, তেতো একটা গন্ধ। যার  থেকে আজ রেহাই পাবে পল্লবি। মন শক্ত করলো পল্লবি, আজ পঁচিশে বৈশাখ না, আজ ৯ই মে, আজ কোর্টের ফাইনাল হিয়ারিং হয়ে যাবে,পাঁচ বছরের দাম্পত্য থেকে আইনত মুক্তি পাবে সে। উপরি পাওনা মেয়ে আপ্লিতার ওপর সম্পূর্ণ অধিকার, সবকিছু প্রায় ফাইনাল। কিন্তু জুঁইয়ের গন্ধটা যেন পিছুই ছাড়ছেনা আজ।মা এসে দাঁড়ায় পাশে, বলে- " আজ তো একটা গান গাইতেই পারিস, পলি, আজ থেকে আপ্লিতা তো তোর। তোর ছোটবেলার সেই প্রিয় ভোর, আজ প্রায় দু বছর কোনো

Labour of love....

এরমটা কতবার পড়েছি উপন্যাস এ, মফঃস্বলের সেই সাইকেল চালিয়ে রিকশা ধাওয়া করা প্রেম গুলো ঠিক টেকেনা, কিন্তু বাকি জীবনটা ওই গলার কাছে কাটা হয়ে আটকে থাকে, শহুরে দু কামরার ফ্ল্যাটে ব্রেডটোস্ট-এ  হঠাৎ করেই স্কুল পালিয়ে তার হাতের পোড়া রুটি তরকারির কথা মনে পড়ে, আমরা ভালোবাসার যত্ন না করে কোথাও যেন তার দাস হয়ে উঠি হঠাৎ, সেদিন থেকে কি একটা হয়েছে আমার, খুব পর লাগছে নিজেকে তোমার কাছে, বিকেল সাড়ে দুটোর সময় আমার পশ্চিমমুখী বারান্দায় রোদটার মতো ও এখনো প্রকট গো তোমার কাছে?? কি জানি!! সে যাই হোক তুমি কিন্তু কখনো দাস হয়ে যেওনা আমার! ভালোবাসাই থেকো, মিঠাই কে বোলো আমাকেও এট্টু ভালোবাসতে 😊 বড্ডো কঠিন জায়গায় থাকি আমি, আমার ফ্ল্যাটের দক্ষিণ জানলার পাশের বাসায়, যারা থাকে তারা প্রায় পঞ্চাশ ছুঁই, তবু নিজের বাসা ভাঙে, পরের টাও ভাঙে।। আবার লাল চোখ দেখিয়ে বলে দেখে নেবে সবটা। ভয় করে জানো?? তুমি কোনোদিন শহুরে হয়ে যেওনা, আমি নাহয় এক আধদিন পোড়া রুটি আর বাপুজি কেক খাওয়াবো তোমায়, তুমি বদলে যেওনা আমার কথায় কোনোদিন, & please let me remain the labour of love....

তুমি শহর ছাড়ার পর

আজ শহরে খুব এলোপাথাড়ি হাওয়া, জানো? তুমি শহর ছাড়ার পর, প্রথম রাত্তির; রাত দুটো বাজতে দশ, ঘুম নামছেনা শরীরে। মশারি এফোঁড় ওফোঁড় করছে দক্ষিণী হাওয়া। আমার তখন বছর উনিশ হবে, দিতসা, সুপ্রীতি কে ভালোবাসতো, তখন চায়ের ভাঁড় আগাগোড়াই আমার খুব প্রিয়; আমি চায়ে চুমুক দিতাম, আর ওরা  একে অপরকে; লজ্জায় লাল হয়ে যেতাম আমি। তবু জানতাম ওটাকে ও ভালোবাসা বলে।। বছর ঘুরে দিতসার এক পুরুষ সঙ্গী হলো, হাঁটুর বয়েসী, তবু তার যৌনাঙ্গ আর, কবিতার পঙক্তি সবটা ঢেকে দিত দিতসার।। স্বপ্ন বুনত সংসারের; ওই যেমন দুঃসাহস এ, আমিও বুনে ফেলি; মাঝে মাঝে। মা বলছিল, তোমার অপেক্ষা করা নাকি বৃথা, আমার চুলে পাক ধরবে, আর তুমি অন্য কাউকে নিয়ে কবিতায় মাতবে। আমি বোঝাতে পারিনা, তোমার বুকে লেগে থাকা আমার ওই পাহাড়ি শান্তিটা।। চুপ করে যাই।। তুমি অন্য কারোর হলেও, কিছু করার নেই আমার; অপেক্ষা ছাড়া।। দিতসা সেবার ও পারেনি।। কেউ অপেক্ষা করতে পারেনা ক্যানো? জানো?? তুমিও বলছিলে, অন্য লোকের হয়ে যাওয়া সোজা; সবাই বলে, এখন আমার বয়স পঁচিশ মতো, দিতসা আজ এই পাঁচবার হলো রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস বদলালো; কেমন ঘেন্না করতে ইচ্ছে হচ্ছে আজ আম

বসন্তঝড়

এই যে তুমি আসবে বলে, অপেক্ষাদের গলায় দড়ির, ফাঁসের মাঝে আটকে গেছি; তেমন ভাবেই তুমিও আজও, ওই পাড়েতেই দাঁড়িয়ে আছো, কারণ তোমার কাছের থেকে, দূরে থাকার কারণ বেশী।। এই যে তুমি আসবে বলেই চা এর ভাঁড়ে মুখ লুকিয়ে, কাঁদছি যে খুব; তেমন ভাবেই তুমিও আমার রুমাল ভেবে খাতার পাতায় মুখ লুকোবে, আর দেবে ডুব।। এই যে তোমার মেসেজ এলেই, মায়ের কথার অবাধ্য হই, যত্ন করে জল মোছা ঘর, ডিঙিয়ে ছুটি ফোনের কাছে; তোমার বোধহয় ওরম করে রিং বাজেনা, কানের কাছে হয়তো বা সেই আলতো করে গজল বাজে।। এই যে তুমি ফিরবে ভেবেই পা বাড়িয়েই, আটকে গ্যাছ এন্টেনাতে, ওই কারণেই আজ ও আমার টিভির পর্দা সাদা কালো। কে আর জানে কোন সময়ে ছাদের পাশে, কোন মেঘটা বাসবে ভালো।। এই যে আমার শহর জুড়ে আজকে ভীষণ রোদ উঠেছে, হাওয়া আপিস গুজব রটায়, বজ্র বিদ্যুৎ বৃষ্টিপাতের; বাসের সিটে সেই মেয়েটার চুল উড়ছে, যার চুলে আজ হঠাৎ করেই, গন্ধ ভাসছে তোমার কাঁধের।। এই যে আমি বলতে গিয়েও, অনেক ব্যথা লুকিয়ে ফেলি, বুকের খাজে; আমিও জানি ওদের তুমি বের করবেই কবর খুঁড়ে, সেদিন আমি গুছিয়ে নেব বুকের আঁচল, বসন্ত ঝড় থামবে বুকের, তোমার নামের হাওয়ায় উড়ে।।

যাকে আজ রঙ দেওয়া হলনা

আজকে বরং একটা ছেলের গল্প বলি? শুনবে বলো ? চৌরাস্তায় চায়ের দোকান, রুটিন মাফিক। বছর আটের একটা ছেলে ঘুমিয়েছিল, পাশবালিশে; তারই নীচে ছোট্ট চিঠি, 'গেলাম তবে'- এ সংসারে বড্ড ট্রাফিক।। এমনই সব গল্প শোনায়, বসন্ত দিন।। আমিও তখন বছর পাঁচেক, বাবার মিলে বন্ধ তালা, হঠাৎ করেই; এসব কথা হাওয়া অফিস, জানায় না তো; সব পাতারাই উড়বে ভেবে, ঝড়ে পড়ে এমন দিনে, কিছু পাতা মায়ের মত আটকে থাকে, শেষ অবধি, ওরাই জেতে, তুমি ও জানো!! এসব কথাও শোনায় বটে, বসন্ত দিন।। এই যে তোমার আমার মাঝে, দূরত্ব দিন, দূরত্ব রাত; পালিয়ে আমি যেতেই পারি দু চোখ মেলে, কিন্তু আমি সেই ট্রেনেরই টিকিট কাটি, যে সব ট্রেনের শেষ স্টেশনে তোমার বাড়ি।। বিপদ বুঝে হাত বাড়াতে সবাই পারে, হাতও পাতে অনেক কেউই, তোমার মত বুক পাততে কজন পারে? সেই যে সেদিন চার্চএ গিয়ে, পাঁচটা আগুন জ্বালিয়েছিলাম, মন খারাপে, সেদিন বোধ হয় গুড ফ্রাইডে, পরের দিনই তোমার চিঠি, তুমিই বলো, জেসাস তবে মিথ্যে বলে?? তোমার আমার বাক্যালাপও অ-নিয়মমাফিক, তুমি বল একদিন ঠিক পালিয়ে যাবোই, এ সংসারে ভাঙ্গনগুলোই রুটিনমাফিক, আমিও জানি, একটু স্রোতের উল্টো গেলে

টেবিল টার্নার 🎨

প্রাক্তন প্রেমিকের প্রেমিকার সঙ্গে মুখোমুখি এক টেবিলে বসেছো কখনো?? প্রচ্ছন্ন আগুন তোমার চোখে, আর তার চোখ বৃষ্টি ভেজা বসন্তের মত স্নিগ্ধ। ওরা দুজন রোজ দিনের শেষে অন্তত মুঠোফোনে একে অপরকে কাছে টানে, একসাথে থাকার রিহার্সাল করে, প্রত্যহ আয়নায় দাঁড়িয়ে বলে -  "আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না!!!" আর কোনো রং চেনেইনা ওরা... টেবিল টার্ন করে, তুমি ট্রুথ সিলেক্ট করো, তোমার আয়নার রং বসন্তের মত, মুখ দেখা যায় না ওতে। তবু সকালে উঠে রোজ বল "আমি পারবো!!" বাইপাসের পাশের কোনো হোটেলের চার তলার কোনো ঘরে, তোমায় এলোমেলো করার পর যখন সে বলে, আমার অন্য কাজ আছে, তুমি অন্যের হতে পার।।  নরম চোখে আয়না দেখ তুমি।। আয়না বলে ওঠে, তুমি পারবেই!!! 🎨

প্রলাপ-১

হাওড়া ব্রীজ ধরে হেঁটে চলেছি আমি, সানাই এর আওয়াজ টা মুছছে না কান থেকে। আমি কখনো ওভাবে কাউকে হারাইনি জানো? আমায় কেউ শান্তনা ও দেয়নি, তাই, তবু, বেনারসীর রঙ দেখে, একলা লাগছে আজ। কী একটা সে নেই, সে নেই সুর চারপাশে। কেমন দেখতে হয়, ছেড়ে যাওয়াদের?? রাত দেড়টার ট্রামের মত কী?? বলবে আমায়? তুমি ফিরতে পারবে আমার কাছে?? আমার বালিশের কাছে বোরোলিন থাকে, আমি ঠিক সামলে নেব, শুধু এই সানাই টাকে থামাও তুমি।। একবার থামাও প্লিজ!!

ভো-কাট্টা 🙃

আমার শহরে দার্জিলিং এর মতো মেঘ করেছে জানো? জমাটি কুয়াশা,  শুধু  পাহাড় দেখা যাচ্ছে না, এই যা...         হাজার পৃষ্ঠা উল্টে আসার পর, আজও আমার মনে হয়, আমি আর তোমায় ভালবাসতে পারলাম কই, তাই তো আমার সাথে মূহুর্ত কাটানোর পর ও আমাদের খুব প্রিয় গান লিখে অন্যের ছবি টানিয়ে দাও নিজের দেয়ালে। জানো, প্রায় বছর চোদ্দো আগে, মামাবাড়ির সামনের গলিতে অনেক ভীরের মাঝে দাঁড়িয়ে প্রথম চলে যাওয়া দেখছিলাম। চলে যাওয়ার রং সাদা আর গন্ধ টা রজনীগন্ধার মত। তারপর থেকে চলে যাওয়ার ভয় পাইনা আমি। কান্না পায়, এই যা। সে তো ট্রেন স্টেশন ছাড়লেও কেঁদে ফেলি আমি, তুমি অত ভেবোনা তার নিয়ে।পুজোর বিকেলের কফি হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে যেমন তোমার চলে যাওয়ার ভয় পেয়েছিলাম,ওরমটা রোজ রাতে পাই আমি। ভালো রাখতে পারলাম কই?? তুমি ও চলে যেতেই পারো, কাউকে বাঁধিনা আমি, দূর থেকে বিরহ সাধনা করতেই পারি, করিও তো। প্রতিযোগিতাও পারিনা, তাই তুমি চাইলে ও তোমার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট হতে পারবনা আমি, বড়জোর দার্জিলিং এর সেই রঙিন একচালা হতে পারি, যেখানে ২৪*৭ তোমায় বেঁধে রাখার কোনো পাহাড়াদার নেই। সে যাই হোক, ঘুড়ি, লাটাইকে যতটা চায়, অ

সমান্তরাল

চাদর ঢেকে ভিজছে শহর, পাখির ঠোঁটে জলের বুক; পুড়ছি তোমার দুরত্বতে, অথৈ জলে আমার সুখ।। ঘড়ির কাঁটা থমকে গেছে, হয়তো তখন পাঁচটা দশ; বজ্র, বিদ্যুৎ, বৃষ্টিপাত ও প্রেমের কাছেই মানছে বশ।। সাতটা পাঁচের লোকাল চেপে, রোজের একই উপন্যাস; বৃষ্টি ভিজে নতুন শোনায়, তোমার আমার দীর্ঘশ্বাস।। চুল শুকিয়ে আয়না দেখি, চোখের কোনে জমাট জল; অবাধ্য এই মনটা কে রোজ, নতুন কী আর শোনাই বল?? চিলেকোঠায় মোমের নীচে, গালিব রুমি পড়ছে কেউ; অসময়ের বৃষ্টিপাতে, নতুন করে বাড়ছে ঢেউ।। অন্ধকারে ব্যালকনিতে কাগজ ফুল ও ভিজছে চুপ; ক্রীমের আঁচড় নখের ডগায়, ঠোঁট ছুঁইয়ে যায় কার চিবুক।।? অন্য শহর, অন্য ছাঁদে, নতুন কিছু লিখলে আজ ?? স্বপ্নে এসো, অপেক্ষাতে, তোমায় ঘিরেই বৃষ্টি সাজ!!

প্রত্যুত্তর

তোমার আমার অমিল কোথায় জানো? তুমি ভালবাসাতে পারো, আমি আর তা শিখতে পারলাম কই? এক বৈশাখ থেকে ফাগুন কাটিয়ে ফেললাম তোমার গন্ধ মেখে। এতদিনে মাত্র আটবার ছুঁয়ে দেখেছি তোমায়, কখনো অল্প, কখনো বিস্তর। প্রত্যেক ছোঁয়ার শেষে তুমি দাগ রেখে যাও শরীর অথবা মনের একপাশে, ধীরে ধীরে দাগ মিলিয়ে আসে, অপেক্ষা শুরু হয় আবার। বিশ্বাস করো, এর আগেও অনেকবার পুরুষ চিনেছি আমি, পৌরুষত্ব ছুঁয়ে দেখেছি, অনেক বার দাবানলের কারণ হয়েছি আমি, চোখের আগুনে অনেক ফাগুন থমকে হাওয়ায় মিলিয়েছি আমি, তোমার মত আমায় বাঁধতে পেরেছে ক'জন, তোমার প্রত্যেক লেখনী, তোমার প্রতি বারের জড়িয়ে ধরায় হারিয়ে ফেলার ভয় দেখাতে পেরেছে ক'জন । আর ঐ প্রত্যেকবারের ভয় আমার ভালবাসা বাড়িয়েছে রোজ, ঘড়ির কাঁটার মতো আঁকড়ে ধরেছি তোমায়।  তুমি প্রতিবার বলো, আমি কারোর হবনা, আমি কোত্থাও যাবনা, আমার মোটেও ভয় কমেনা জানো? হয়তো কমাতেও চাইনা। হ্যাঁ! আমি হিংসে করি, আজকালের এই লাল নীল দুনিয়ায় অন্য কোনো নারীর উন্মুক্ত বক্ষবন্ধনীর ছবিতে আঙুল ছুঁয়ে, তুমি শুধুমাত্র তোমার ভালোলাগা জাহির করলে আমার হিংসে হয়, অন্য কোনো নারী কল্পনাতেও তোমায় ছুঁতে চাই

বেরু বেরুর হিজিবিজি🚌

রাত্তির তখন ২টো ৩৫, বাসটা থামল আওয়াজ করে,বাসের জানলার বাইরে চোখ রেখে দেখলাম পূর্ব বর্ধমানে আপনাকে স্বাগত, চোখ কচলে মনে পড়ল একটু আগেই ওনার সাথে হোয়াটসঅ্যাপ এ একটা একতরফা একটা ঝগড়া করে এসেছি, কারণ আমার এই কমবয়েসী তীর্থ ভ্রমণের পথে, হাজার হাজার মাইল দুরত্বে থাকা আমার তিনি তার অনলাইন সান্নিধ্য না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, যদিও এখনো আমরা প্রেম পর্যায়েই।  আমার সহযাত্রীরা ঘুমে মগ্ন, ওপাশের সিটে ষাটোর্ধ্ব দিদাটা, দাদুটার গায়ের চাদরটা বেশ করে টেনে দিল, আমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসলো, ওদের সাথে আমার খুব ভাব হয়েছে। ওদের নাম দিয়েছি মিষ্টি দাদু দিদা। ঠিক আমার মনের মত, একসাথে থাকার অভ্যেসটা কে ও ওরা অভ্যেস করে ফেলেছে। সকালে বৌদি ফোন করেছিল, দাদা একটা বাচ্চা চায়, নয়তো ডিভোর্স, পাগলের মত করছিল মেয়েটা,অ্যাডপ্ট ও করতে নারাজ। অথচ আজ থেকে বছর দশেক আগে প্রেম সেরে বিয়েতে এসে দাঁড়িয়েছিল ওরা, লাল রং টা বোধহয় ফিকে হয়েছে অনেকটা, আমি ও অপারগ হয়েই বললাম ফিরে এসে বসব সবাই, কিন্তু ভাঙনের আওয়াজ টা বেশ স্পষ্ট। এইসব ভাবতে ভাবতে রাতটা পরিষ্কার হয়ে এলো, ম্যাসান্জোরে পৌঁছলাম আমরা। লালমাটি, মামা ভাগ্নে

||week of love|| ❤️

মাণিকতলার মোড়ের বিরুষ্কার মান্যবর-মোহে -র বড় পোস্টারটার নীচে রোজ আটটা চল্লিশ এ এসে দাঁড়ায় ঋদ্ধি.. আর মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পর্ণার বাসটা পাস করবে, আর ঐ কয়েক ঝলক দেখে নেবে ঋদ্ধি, সিগন্যালে আটকালে আরো কিছুক্ষন বেশী.. বিগত দু'বছর ঐ একই রুটিন দুজনের, এক অমোঘ অপেক্ষা... কোনোদিন বলা হয়ে ওঠেনা.. শহরের কোলাহলে হারিয়ে যায় অল্প করে.... ঠিক চিড়িয়ামোড়ের লাল সবুজ কমলা পতাকা গুলোর ভীর সরিয়ে, ভীর বাসটায়  উঠে একটু হেলান দেয় কেকা, যেন একদন্ড জিরিয়ে নেওয়া। ব্যাগ থেকে ফোন বার করে... আলতো স্বরে বলতে থাকে কোথায় কপি ভাপা, কিংবা পোস্ত রেঁধে রাখা আছে, কোথায় ওয়ালেট কিংবা রুমাল, আমি বাস পেয়েছি, বলার ঠিক আগেই ওদের প্রান্ত ফোন কেটে দেয়, শ্রাবণ- এর মেঘ হয়ে যায় কেকার মুখটা.. প্রায় বছর পাঁচেক ওরা একসাথে, একই ইউনিভার্সিটি থেকে একই অফিস, বিঠোফোনের নাইন্থ সিম্ফনির মত সত্যি ছিল ওদের সবটা গল্প। প্রথম বার অন্তরার কপালে অন্য কারোর আঁকা লাল দাগটা বেশ অবাক করেছিল সৌপ্তিককে, বেশ কদিন ঘুমোতে পারেনি.. তবুও আজ ও অফিস টা এক, অন্তরাকে নিশ্চিন্তে অন্য বুকে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বটা আজও ওরই...

মাঝরাতের গল্প 😴

আঙুল ছুঁয়ে জীবন শেখাও তুমি, শীতের রোদে পেয়াজ কলির মতো.. রাত পোশাকে জড়িয়ে ধরো তুমি, একটুখানি আলগা হলেই সুতো।। অনেক বারই রেলিং ঘেঁষে এসে, ভোর হয়েছে, সামলে গেছি দুজন.. ঠিক সময়ে প্যারাসুটের মত, তোমার মত,   আগলে রাখে ক'জন?? আমি ও জানি, অনেক পাথর বুকে, সব ঝড়নাই খিলখিলিয়ে ওঠে.. তারাই শুধু ভয় পেয়ে যায় রাতে, যার সকালে তোর মতো কেউ জোটে।। রাতদুপুরে ব্যথা চেনাও তুমি, গল্প শোনাও তবু কিংবা যদির.. কিছু পাথর গড়িয়ে গেলে হঠাৎ, একটু বুঝো, কষ্ট বাড়ে নদীর।। আমরা দুজন অনেক গল্প লোকাই, বোঝাই আমরা অনেক খানি সুখে.. শুধু আমরা পোশাক বিহীন হলে, দু ফোঁটা জল গড়িয়ে আসে পরষ্পরের বুকে।। সবহারাদের ওই টুকুই তো পাওয়া, নাই বা ছুঁলাম চাঁদ কিংবা সূর্য.. এটাই শুধু বলার ছিল তোমায়, ভালোবাসতে সাহস লাগে, আগলে রাখতে আরেট্টু ধৈর্য্য।।